বিরলে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহতের বাড়িতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ সোমবার সমবেদনা জানাতে উপস্থিত হোন। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের সকলে সাথে ছিলেন।
সোমবার দুপুর দেড় টায় নিহত হাজী মোহাম্মদ আলী এর লাশ দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে এ্যাম্বুলেন্সযোগে পুলিশী নিরাপত্তায় নিজ বাড়ীতে পৌঁছানো হয়। এর পরে লাশের গোসল সেরে আত্মীয় স্বজনদের এক পলক দেখার ব্যবস্থা করা হলে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতিতে নিমজ্জিত হয় পুরো গ্রামে। মুহুর্তে এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। পরে বিকাল ৩ টায় সিঙ্গুল হামিদ হামিদা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, ২৮ এপ্রিল দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় আজিমপুর ইউনিয়ন, ফরক্কাবাদ ইউনিয়ন ও বিরল ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বিরলের ১ নং আরও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে মোহাম্মদ আলীকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই রাতেই জেলা প্রশাসক শাকিল আহমদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। পরদিন সোমবার দুপুরে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে এ্যাম্বুলেন্সযোগে পুলিশী নিরাপত্তায় নিজ বাড়ীতে পৌঁছানো হয়।
এসময় জেলা প্রশাসক শাকিল আহমদ ও পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ নিহতের বারীতে পৌঁছে দাফনের জন্য নিহতের পরিবারকে সরকারি সহায়তার অর্থ তুলে দেন এবং আহত একজনের চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে বলে জানান। সাংবাদিকদের সাথে আলোচনাকালে জেলা প্রশাসক শাকিল আহমদ জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) কে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, সিঙ্গুল হামিদ হামিদা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও জবায়দুর রহমান এর সমর্থকদের মধ্যে ২০ ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নিয়ে হট্টগোল বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৬০-৭০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ঘটনায় এখনও কোন মামলা দায়ের হয়নি বা কাউকে আটক করা হয়নি। অযথা কাউকে হয়রানি করা হবে না। প্রকৃত ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিহতের বাড়ীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বহ্নি শিখা আশা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা বেগম সোনা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল মালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও রাণীপুকুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আযম, আজিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান নোবেল, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান লিটন আলীসহ অনেকে লাশ হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন।