ঝিনাইদহ (কালীগঞ্জ) ৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার ভারতে খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশে মামলা হয়েছে (মামলা নম্বর-৪২)। ঢাকার ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানায় মামলার এজাহার দায়ের করেন তার ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।বুধবার সন্ধ্যায় তিনি থানায় উপস্থিত হয়ে এজাহার দায়ের করেন। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাদ আলী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত এমপির মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি, সবাই অজ্ঞাত হিসেবে দেওয়া হয়েছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। এটি নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড। এমপি আনার একজন জনপ্রিয় এমপি ছিলেন।
এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার জন্য ৫ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিল আক্তারুজ্জামান শাহীন। হত্যাকান্ডের আগে কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল হত্যাকান্ডের পর। তাদের মিশন সফল হওয়ার পর আনারের লাশের টুকরোগুলো গুম করার জন্য সিয়াম ও জিহাদকে দায়িত্ব দিয়ে ঢাকায় চলে আসে আমান। ঢাকায় এসে দেখা করে আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় এসে মোহাম্মদপুরের বোনের বাসায় আত্মগোপনে ছিল আমান। সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয়েছে।হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা সাজিয়ে দিয়ে ১০ মে ঢাকায় চলে আসে আক্তারুজ্জামান শাহীন ১৮ মে আবারও ভারত হয়ে নেপালে চলে যায়। ২১ মে নেপাল থেকে চলে যায় দুবাই। ২২ মে দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়।যুক্তরাষ্ট্রে শাহীনের ঠিকানা নিউ ইয়র্কে ৩৭৯ ইস্ট সেভেন্থ স্ট্রিট ব্রুকলিন এলাকায় বলে জানা গেছে। আমানুল্লাহ সাঈদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। তিনি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) নেতা ছিলেন। ১৯৯১ সালে যশোরের অভয়নগর এলাকায় গণেশ নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত কারাবন্দি ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০০ সালে আবারও ইমান নামে আরেক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি কারাবন্দি ছিলেন। আমানুল্লাহর গ্রামের বাড়ি খুলনার ফুলতলার দামোদার এলাকায়। তার বাবার নাম কায়সার সাঈদ। মায়ের নাম দোলানা বেগম। স্ত্রী ফারজানা আক্তার। তার বিরুদ্ধে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মামলা রয়েছে।এমপি আনোয়ারংল আজিম হত্যাকান্ডে কলকাতায় একটি মামলা হয়েছে। কলকাতার স্থানীয় পুলিশ ওই ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এমপি আজিমের পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।লাশের টুকরো গুলো কোথায় ফেলা হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।