নীলফামারীর সৈয়দপুরে আবারো চলছে প্রখর তাপদাহ। বিশেষ কাজ ব্যতিত মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। সূর্যের তাপমাত্রা এতোটাই প্রখর যা সহ্য করতে পারছেন না মানুষ। তাপদাহের কারণে পড়ছে প্রচন্ড গরম। একটু স্বস্থি পেতে মানুষ ছুটছেন বাঁশ বা গাছের নিচে।
অনেকে ভেজালযুক্ত ফুটপাতে রং বেরঙের শরবত পান করছেন।পানির অভাবে আবাদি জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। কেউ কেউ শ্যালো মেশিন ও গভীর নলকুপ দিয়ে জমিতে পানি জমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তবে এতে ডিজেলের দাম বেশী হওয়ায় দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া দপ্তর জানায়,সকালে ও দুপুরে তাপমাত্রা থাকছে ৪২ ডিগ্রির ওপরে।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা সরকারি হাসপাতালের আর এম ও ডাঃ মোঃ নাজমুল হুদা জানান,অতিরিক্ত গরমে নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। প্রতিদিন হাসপাতালে রোগির ভীর বাড়ছে। অনেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাসায় ফিরছেন আবার কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
শহরের পাকা সড়কগুলো উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে। কোথাও কোথাও সড়কের পিচ গলে গেছে।
সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এ- কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মসিউর রহমান জানান, প্রচন্ড তাপদাহের কারণে মানুষ স্বস্থি পাঁচ্ছেন না। কোন কোন এলাকায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে বাসাবাড়ীর নলকুপে পানি কম উঠছে। কোন কোন বাসার নলকুপ দিয়ে পানি বেরই হচ্ছে না।
গরমে মানুষ একটু স্বস্তি পেতে বিভিন্ন প্রকার শরবত,আখের রস,ঠান্ডা পানির দিকে ঝুকছেন।
আর এ সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু শরবত বিক্রেতা তাদের তৈরি শরবতের গ্লাস প্রতি দাম বাড়িয়েছেন। তাছাড়া তারা শরবত তৈরি করছেন বিভিন্ন ক্ষতিকর রং মিশিয়ে। মানুষ না বুঝে ওই রং মেশানো শরবত খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়ছেন।
সাংবাদিক অনিক এ মন্ডল জানান,সৈয়দপুর শহরের পাঁচমাথা মোড় ও পোস্ট অফিস মোড়ে বিক্রি হচ্ছে শরবত। এগুলো বিক্রি হচ্ছে প্রতি গ্লাস ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা। তৈরিকৃত শরবতে দেয়া হচ্ছে রং, বরফ,সেকারিন। মানুষকে আকৃষ্ট করতে শরবতে নানান রং দিয়ে তা রঙিন করা হয়। আর না বুঝে মানুষ এ শরবত খাচ্ছে।
প্রশাসনের নজরে এগুলো এলেও নেই কোন অভিযান। পরিবেশ ও ভোক্তা দপ্তর কেন যেন অসহায়।
অটোচালক আলম জানায়,প্রচন্ড রোদে মানুষ বের হচ্ছে না। ফলে ভাড়া কমে গেছে। তাছাড়া রোদে অটো পামচার হচ্ছে বেশি।
রিক্সা চালক ভুট্টু জানায়,গত এক সপ্তাহে তার রিক্সার চাকা পামচার হয়েছে তিন বার। অতিরিক্ত গরমে চাকা টিকছে না।
নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহনওয়াজ হোসেন শানু বলেন,গরম ও রোদের কারণে বাস যাত্রী কমে গেছে। ফলে আয় কমেছে।
জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মমতাজ আলি জানান,তীব্র তাপদাহের কারণে বাসে দেখা দিয়েছে যাত্রী সংকট। যার কারণে শ্রমিকরা অর্থনৈতিক সংকটে দিন পার করছে।
সৈয়দপুর তামান্না হলের পরিচালক মোঃ মাহবুব আলম ঝন্টু বলেন, তীব্র তাপদাহের কারণে হলে দর্শক কমে গেছে। প্রতিদিন ৫টি শো চললেও বর্তমানে শো চলছে তিনটি। ওই তিন শোতেও তেমন দর্শক মিলছে না। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে।