ঘূর্নিঝড় রেমাল মোকাবিলায় উপকূলীয় জনপদ খুলনার কয়রার ৭ টি ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রস্তুুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি মোকাবিলা করার জন্য উপজেলার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করে কর্মস্থল ত্যাগ না করতে বলা হয়েছে। প্রস্তুতি রাখা হয়েছে ১১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র।
কেন্দ্রগুলোতে ৩২ হাজার ৫শ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এ উপলক্ষে গতকাল ২৫ মে বেলা ১১ টায় কয়রা উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বিএম তারিক-উজ-জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কয়রা-পাইকগাছার সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান। এতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক সহ সিপিপি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম তারিক-উজ-জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলোও প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। গৃহপালিত প্রানীর জন্যও নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্যোগের খবর আদান-প্রদানের জন্য উপজেলা পরিষদে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ রেজাউল করিম জানান, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে জরুরী সেবা দিতে ৭ ইউনিয়নের জন্য ৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
এ ছাড়া সেন্ট্রাল হাসপাতালের জন্য ১টি মেডিকেল টিম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তুতি রয়েছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। উপজেলা সিপিপির টিম লিডার জিএম আব্দুল্যাহ আল মামুন লাভলু বলেন, দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে সাত ইউনিয়নে ১৪৬০ জন ভলান্টিয়ার স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৭৩০ ও নারী ৭৩০ জন। উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ মামুনার রশীদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস বা যে কোনো দুর্যোগের সময় মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্র অবস্থানকারীদের খাদ্য, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে জন্য উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কয়রা-পাইকগাছার সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে যাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতর্কতামূলক প্রচারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগের সময় যাতে মানুষ আশ্রয় নিতে পারে তার জন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ভবন প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের খাদ্য সরবরাহ এবং চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম কাজ করবে।