চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলার উজিরপুর উপজেলার এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর উঠান বৈঠকে প্রকাশ্যে ইউপি চেয়ারম্যানের আপত্তিকর বক্তব্যে পুরো উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই উপজেলার একাধিক ভোটারদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। ফলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক।
রোববার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতারা বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের টানা অবরোধের সময় পেট্রোল বোমা হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি (তৎকালীন প্রভাবশালী বিএনপি নেতা) ইউসুফ হাওলাদার। রাতারাতি ভোল্টপাল্টে মামলা থেকে রেহাই পেতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে ইউসুফ হাওলাদার বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
ওই উপজেলার আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বাদল অভিযোগ করে বলেন, গত ১৬ মে কাপ-পিরিচ মার্কার অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমান ইকবালের উপস্থিতিতে হারতা এলাকায় উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ হাওলাদার ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি’র নাম ব্যবহার করে দম্ভ করে বলেন, ‘হাসানাত ভাইর দোয়া নিয়া নাইম্মা গেছি, এ্যাহন ধরমু ঘেডি-দিমু মাডি, কিসের....কান্নাকাটি। তার (ইউপি চেয়ারম্যান) এমন আপত্তিকর বক্তব্যে নির্বাচনী মাঠে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
প্রায় একই অভিযোগ করে প্রভাবশালী সংসদ সদস্যর নাম ব্যবহারকারী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন দোয়াত-কলম মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সুখেন্দ্র শেখর বৈদ্য।
বর্তমান চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল মজিদ সিকদার বাচ্চু অভিযোগ করে বলেন, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মনোনীত হয়ে নৌকা প্রতীক পেয়ে আমি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয় হাফিজুর রহমান ইকবাল। এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ সর্বস্তরের উপজেলাবাসীর অনুরোধে আমি প্রার্থী হয়েছি। ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইকবাল ও তার সহযোগিরা। যেকারণে গত দুইদিনে আমার অসংখ্য সমর্থকসহ সাধারণ ভোটারদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে। ফলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমান ইকবাল তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈশ্বানিত হয়ে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীরা এখন নানা অপপ্রচার ছড়াচ্ছে। তাদের কোন অপপ্রচারেই আমার বিজয় ঠেকাতে পারবেনা।
তবে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি’র ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী বলেন, হাসানাত ভাইয়ের নিজস্ব কোন প্রার্থী নেই। ভোটারদের ভোটের মাধ্যমে প্রার্থীদের নির্বাচিত হতে হবে। তিনি আরও বলেন, যারা তার (হাসানাত) নাম ব্যবহার করে ভোটারদের প্রভাবিত করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হাসানাত ভাই হুশিয়ারী দিয়েছেন।