ভেড়ামারায় রমজানের আগেই পন্যের দাম বৃদ্ধি 

এফএনএস (শাহ্ জামাল; ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া) :  : | প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারী, ২০২৪, ১০:৫৮ পিএম

এক মাস আগে যে ছোলার দাম ছিল ৭৫/৮০ টাকা। সেই ছোলায় এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। পবিত্র মাস রমজানকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা শুধু ছোলাতেই কেজি প্রতি দাম বৃদ্ধি করেছে ৩০-৩৫ টাকার মতো। শুধু ছোলা নয় নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল মুদি আইটেমের জিনিসপত্রের নাম বাড়ানো হয়েছে লাগাম ছাড়া। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। মুদি দোকানদাররা জানিয়েছে, রমজান মাসে সব থেকে বেশি বিক্রি হয় ছোলা, মুড়ি, এলাচ, দারচিনি, সয়াবিন আর খেসারীর ডাল। রমজান মাসের এখনো ২ মাস বাকি। তারপরো এখনই বৃদ্ধি পেয়েছে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রী। বর্তমানে সাধারণ ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা প্রতি কেজি। আবার একটু ভালো মানের ছোলার দাম ১১০-১১৫ টাকা। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সামান্য মুড়ির দামও প্রতি কেজিতে বৃদ্ধি পয়েছে ৫-১০ টাকা। যে মুড়ি কিছুদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৬৮-৭০ টাকায়। সেই মুড়ির দাম এখন বেড়ে হয়েছে ৭৫-৮০ টাকা। মসলার বাজারে দাম বাড়ার চিত্র আরো ভয়াবহ। ১ মাস আগে এলাজ’র দাম ছিল ১৮’শ টাকা কেজি। একলাফে ৮’শ টাকা দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৬’শ টাকায়। খুচরো বাজারে এর দাম আরো বেশি। বড় এলাজ এর দাম বেড়েছে দ্বিগুন। ১৩’শ-১৪’শ টাকার বড় এলাজ এখন ২৮’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৮০টাকা। অথচ এক মাস আগে এর দাম ছিলো ৩২০টাকা। ১ মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১৬০ টাকা। বাজারে সবকিছুর দাম বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ডিমের দাম। বেড়েছে প্রতি খাঁচিতে ৪৫ টাকা। গত ২ সপ্তাহ আগে ডিমের দাম ছিল ২৭০টাকা প্রতি খাচি। অথচ এই ডিম বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩১৫ টাকা দরে। বিভিন্ন জাতের ডালের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সারাবছর না কিনলেও রমজানে বড়া বানানোর জন্যে অনেকেরই প্রথম পছন্দ খেসারি ডাল বা এ্যাংকার ডাল। কিছুদিন আগেও এই ডালের দাম ছিলো ৭৫টাকা কেজি। কিন্তু বর্তমানে এই খেসারি ডাল খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। মাসকলাই এর ডাল ১৬৮ টাকা থেকে ১৭০ টাকা কেজি, মুগের ডাল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। খোলা আটার দাম ৪৫ টাকা কেজি আবার প্যাকেটজাত আটা কোম্পানি ভেদে ৫২ থেকে ৫৬ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ময়দা কেজি ৭০ টাকা। খোলা চিনির দাম ১৪০ টাকা কেজি আবার প্যাকেটজাত চিনির দাম ১৪৮ টাকা কেজি। লবণ বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা কেজি। খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম দাঁড়িয়েছে ১৭৩ টাকা লিটার। খোলা সরিষার তেল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি অপরদিকে বোতলজাত সরিষার তেল এর দাম ২১০ টাকা লিটার। ভেড়ামারা পৌর মার্কেটের মুদি দোকানদার আবির বলেন, প্রতি বছর রমজান মাস আসার আগেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পায়। এতে আমাদের যেমন সমস্যায় পড়তে হয়, তেমনি খোদ্দেরাও দাম শুনেই পালায়। কিছু কিনতে চাই না। কয়েকজন ভোক্তা জানিয়েছেন, নবনিযুক্ত বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু কারসাজি বন্ধে ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। এটি বাস্তবায়িত হলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্র¿ণ করা অনেকটাই সম্ভব হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের জনজীবন বর্তমানে বিপন্ন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ কি আর কারা দায়ী জানতে চাওয়া হলে সোহরাব শাহীন নামের একজন বলেন, “দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির পেছনে কার হাত তা এখন সবাই জানে। সাধারণ ব্যবসায়ী ও জনগণ অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কু-বুদ্ধির শিকার বলে আমি মনে করি।’’ 

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW