সাধারণত জীবন চলার পথে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আর অসুস্থ শরীর থাকা অবস্থায় দুনিয়ার কোনো কিছুতেই মানুষের শান্তি মিলে না। এই বেদনাদায়ক অসুস্থতা থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন উন্নত মানের চিকিৎসা ব্যবস্থা। চিকিৎসার মাধ্যমেই মানুষ এমন বেদনাদায়ক কষ্ট থেকে রেহাই পায়। আর যখন অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত থাকে মানুষ তখন বিষয়টা কেমন দাঁড়ায়? নিশ্চয় এটি অধিকার বিরোধী একটি কাজ। সম্প্রতি এমনি একটি অভিযোগ উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈকালিক স্বাস্থ্যেসেবা নিয়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিনিয়ত সেবা প্রদান করলেও এই সেবাটি হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়াতে বিপাকে পড়েন রোগীরা। এতে জনগণের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালটিতে বৈকালিক চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে রোগীদের মাঝে হাসি ফুটে উঠেছিল। কিন্তু পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সেবাটি ৩ জুন থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জেলার দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্র জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৩ জুন এ হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়েছিল। এ সেবা বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চালু করা হয়েছিল। এ স্বাস্থ্যসেবা চালুর পর চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা ১১ হাজার ৩৬০ জন রোগী দেখেছেন। যেখান থেকে আয় হয়েছে ৩৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ টাকা। গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এসব রোগী দেখার টাকা থেকে সম্মানী হিসেবে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিভাগের এক সভায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা থেকে প্রাপ্ত টাকা চিকিৎসকদের না দেওয়ার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক। ফেব্রুয়ারি থেকে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকেই হাসপাতালে বিকালে রোগী দেখার আগ্রহ হারাতে শুরু করেন চিকিৎসকরা। ৩ জুন থেকে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। এখন কথা হচ্ছে চিকিৎসকদের সম্মানী না পাওয়ার কারণে রোগীরা কেনো চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত থাকবে? স্বাস্থ্যসেবায় নির্ধারিত ফ্রি তো রোগীরা যথারীতি দিচ্ছেন তাহলে হঠাৎ করে স্বাস্থ্যে সেবা বন্ধ থাকবে কেনো? যেসব চিকিৎসকরা অতিরিক্ত টাকা আদায়ের জন্য চিকিৎসা সেবায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে ঐ সকল চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। কেননা চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার আর এই অধিকারে যারা বাধা প্রদান করবে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। আমরা চাই বিগত দিনগুলোতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ যেভাবে বৈকালিক চিকিৎসা সেবা পেয়ে হাসিখুশি ছিল ঠিক আগের রূপেই আবার ফিরে আসুক। এটাই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা।