সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মোনালিসার গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মোনালিসার গ্রেপ্তার
সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা হোসেন

রাজনীতির অঙ্গনে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সৈয়দা মোনালিসা হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীর ইস্কাটন রোডের একটি বাড়ি থেকে গত রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে গ্রেপ্তার করে। রাতেই তাকে মেহেরপুর জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মেহেরপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সৈয়দা মোনালিসার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গত ১৯ আগস্ট মেহেরপুর সদর থানায় দায়ের করা একটি মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মেহেরপুর জেলা পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সৈয়দা মোনালিসা হোসেন অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তিনি বিভিন্ন অনলাইন ক্যাসিনোর এজেন্টদের নিরাপত্তা দেওয়া এবং অর্থ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী মোনালিসা মেহেরপুর জেলায় প্রভাব বিস্তার করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি টেন্ডার, চাকরি নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে তারা অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল সম্প্রতি এক অডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, "আমার ভাই এবং ভাবি টাকার জন্য সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। টেন্ডার, চাকরি, বদলির জন্য মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়া হতো। ফরহাদ হোসেনের সম্পদের পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকার বেশি।"

সরফরাজ হোসেন আরও দাবি করেন, সাবেক মন্ত্রীর এই অবৈধ সম্পদের মধ্যে কানাডার বেগমপাড়ায় একটি বাড়ি ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে।

সৈয়দা মোনালিসার গ্রেপ্তারে মেহেরপুরের সাধারণ জনগণ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও প্রভাবশালী মহলের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছিল না বলে অভিযোগ রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোনালিসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে পরবর্তী সময়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হতে পারে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে মোনালিসার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে