বীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস আজ

এফএনএস (আবুল হাসান জুয়েল; বীরগঞ্জ, দিনাজপুর) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:০২ এএম
বীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস আজ

আজ ৬ ডিসেম্বর দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত দিবস। এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বীরগঞ্জকে শত্রু মুক্ত করে মুক্তি বাহিনী এবং মিত্র বাহিনীর যোদ্ধারা। ১৯৭১সালে ৩ ডিসেম্বর পাশের জেলা ঠাকুরগাঁও শত্রু মুক্ত হওয়ার পর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর (পাক বিহার) অভিমুখে পালিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে। হানাদার বাহিনী বীরগঞ্জ থেকে পিছু হটে বীরগঞ্জ-কাহারোল উপজেলা সীমান্তের দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কে ভাতগাঁও ব্রীজের পূর্ব প্রান্তে অবস্থান নেয়। এখানে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সাথে মুক্তিবাহিনীর তুমুল যুদ্ধে ভাতগাঁও ব্রীজের একাংশ ভেঙ্গে যায়। এ সময় বেশ কিছু মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর বীর যোদ্ধা শহীদ হন।

৫ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় মিত্র বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে দিয়ে বীরগঞ্জ শত্রু মুক্ত হতে থাকে। রাতেই পুরো এলাকা মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী পুরোপুরি দখল করে নেয়। সকালে বীরগঞ্জের অলিগলিতে মুক্ত বাতাসে উড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

স্বাধীনতা যুদ্ধে দিনাজপুর ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন হওয়ায় বীরগঞ্জ উপজেলা এর আওয়াতাধীন ছিল। লে. কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান এর নেতৃতাধীন সেনাবাহিনীর হাবিলদার মোস্তাফিজুর রহমান বীরগঞ্জ ও খানসামার যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়েজিত ছিলেন।

বীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ মহসিন আলী ও শহীদ বুধারু বর্মনের স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পন করা হবে বলে জানিয়েছেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ কবিরুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরুতে ১৪ এপ্রিল ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান বীরগঞ্জ শাখার গার্ড লক্ষীপুর জেলার লক্ষীপুর থানার দিঘলী গ্রামের মৃত সিকান্দার আলীর পুত্র মোঃ মহসিন আলী এবং বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামের মোঃ আবদুর রাজ্জাক মদনপুর সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। 

এ ছাড়াও বীরগঞ্জের ৩জন বীর সন্তান বুধারু বর্মন, রমেন সেন ও মতিলাল বর্মন স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে শহীদ হন।

২০০৮ সালে প্রথম বীরগঞ্জ মুক্ত দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হয়। সে সময় স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়টি পত্রিকায় তুলে ধরেন এবং উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় দিবস উদযাপন প্রস্তুতি সভায় দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালনের দাবি জানান। তার দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হাসান মারুফ আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেই সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরীকে দিবসটি পালনের সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হয়।

২০০৮ সালে বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরীর আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পর প্রথম বারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হয় বীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে