দিঘলিয়ার টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের নির্মাণ কাজ চলেছে দ্রুত গতিতে

এফএনএস (সৈয়দ জাহিদুজ্জামান; দিঘলিয়া, খুলনা) : | প্রকাশ: ১ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০৪ পিএম
দিঘলিয়ার টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের নির্মাণ কাজ চলেছে দ্রুত গতিতে

খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সুগন্ধী গ্রামে ৩ একর জায়গার উপর ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ। এটি নির্মিত হলে খুলনাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ৪টি ট্রেডে ভর্তি হওয়ার মাধ্যমে টেকনিকাল বিষয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবে। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এটি বাস্তবায়ন করছে এবং খুবই দ্রুত গতিতে চলছে এ প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ৫ তলা একাডেমিক কাম ওয়ার্কশপ ভবন ও ৪ তলা প্রশাসনিক ভবনের ঢালাই পিলার নির্মাণ করে তা স্থাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ। মেসার্স এসই এন্ড এমএএস জেভি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৫ তলা একাডেমিক কাম ওয়ার্কশপ ও ৪ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের জন্য ১২/২/২০২৪ তারিখে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছে। চুক্তিপত্র অনুযায়ী ৭২০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে একাডেমিক ভবন ওয়ার্কশপ ও প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নানা যুক্তিসঙ্গত কারণে তা হয়ে উঠছে না। চুক্তি অনুযায়ী উপরোক্ত কাজের দরপত্র মূল্য ২০ কোটি ৮৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেস্ট পাইলের লোড টেস্ট ‘র কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর প্রধান ফটক নির্মাণে ব্যয় হবে ২ কোটি ৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা। মেসার্স সৈকত নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ২২/২/২০২৪ তারিখে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছে। কাজের নির্মাণ সহযোগী সংস্থা খুলনা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে এ জাতীয় আরো ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন (২য় পর্যায়) শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। যেটি ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)’র সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ২০ হাজার ৫২৫ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা।

২০২২ সালের ৩ নভেম্বর দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি) থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু তখন নির্মাণ সামগ্রির মূল্য ঊর্ধমুখী থাকায় কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করতে আগ্রহ দেখায়নি। এর ১ বছর পর ২০২৩ সালের অক্টোবরে নতুন রেটে মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং চলতি বছরের শুরুতে নতুন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।

সূত্রে মতে, প্রতিষ্ঠানটির ৫ তলা একাডেমিক ভবনের সাথে নির্মাণ করা হবে ওয়ার্কশপ ও ৪ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, ৩ তলা বিশিষ্ট টিচার্স ডরমেটরি, ২’শ শষ্যার ৫ তলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস, ক্যাম্পাসের ভেতরের অভ্যন্তরীণ সড়ক, গার্ড রুম, প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সাবস্টেশন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরী করা হবে, নির্মিত হবে শহীদ মিনার, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভ, সারফেস ট্রেনের সিস্টেম, খেলার মাঠ, এছাড়া রয়েছে ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ ও পুকুর খননও করা হবে। দিঘলিয়ার সুগন্ধী গ্রামে এ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মিত হলে পিছিয়ে পড়া এ এলাকার কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটবে। তৈরি হবে দক্ষ মানবসম্পদ।

বিদেশি শ্রমবাজারে যুব সমাজের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি দ্বীপবেষ্টিত এলাকাটির আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। প্রাথমিক অবস্থায় দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন এন্ড ইনফরমেশন, অটোমোটিভ এন্ড ড্রাইভিং, ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল, জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস এই ৪টি ট্রেডে ভর্তি হয়ে পড়াশুনার সুযোগ পাবে ছাত্র ছাত্রীরা।

এদিকে সবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সুগন্ধী গ্রামের কৃতি সন্তান নিজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নিজ জন্মস্থান সুগন্ধি গ্রামে নির্মাণাধীন দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অগ্রগতি দেখতে সাবেক অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান ১৩ মে নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ, প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বলরাম কুমার মন্ডল, নির্বাাহী প্রকৌশলী মুঃ মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারি প্রকৌশলী মোঃ জুলফিকার আলী, জিল্লুর রহমান, প্রকল্পের পিএম সহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে