সরাইলের বিশ্বরোডে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : | প্রকাশ: ২ মার্চ, ২০২৫, ০৫:২৮ পিএম
সরাইলের বিশ্বরোডে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

যানজট, চাঁদাবাজি ও অপকর্ম রোধে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন প্রশাসন। গতকাল সকাল থেকে দেড় ঘন্টার বিরামহীন অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন। সাথে ছিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনীরা কায়ছান, জেলা সদরের এসি ল্যান্ড মুক্ত গোস্বামী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল হাসান ও খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মামুন রহমান। গোল চক্করের তিন দিকের উচ্ছেদে সন্তুষ্ট হলেও জনৈক প্রভাবশালী নেতা ও আরেক যুবলীগ নেতার দ্বারা পরিচালিত পূর্ব পাশের নামমাত্র উচ্ছেদ কার্যক্রমে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। 

ইউএনও’র দফতর, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানায়, সরাইলের বিশ্বরোড মোড়টি বাংলাদেশের একটি গুরূত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে কয়েকটি সিন্ডিকেট সওজের জায়গা কৌশলে দখল করে গরীব অসহায় লোকদের রক্ত শোষণ করে খাচ্ছে যুগযুগ ধরে। ইশারায় মালিকানা নিয়ে দৈনিক দোকান প্রতি ভাড়া আদায় করছেন ৪-৫ শত টাকা করে। একেক সিন্ডিকেট প্রতিদিন ২০-৪০ হাজার টাকা চাঁদা তুলছে। এই লোভে গোল চক্করের পূর্ব পাশে সরকারি টাকায় নির্মিত সিএনজি চালিত অটোরিকশার ষ্ট্যান্ডে দখল করে দোকান বসিয়ে ভাড়া খাচ্ছেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা। ফলে সিএনজি গুলো বাধ্য হয়ে মহাসড়কের উপরে দাঁড়িয়ে থেকে যানজন তৈরী হয়। সওজের জায়গার দখল নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা মহাসড়কের উপর দাঙ্গা হাঙ্গামার ঘটনাও ঘটেছে। অবৈধ স্থাপনা গুলোর আড়ালে মাদক থেকে শুরূ করে নানা ধরণের অপকর্ম হচ্ছে প্রতিদিন। সম্প্রতি অবৈধ দখলদারদের কারণে মহাসড়কে যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাতায়তকারী লোকজন এখানকার যানজটে নিয়মিতই ভোগান্তিতে পড়ছেন। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার যানজটের কারণ সমাধান বিষয়ে সভা করছেন নিয়মিত। এরই ধারা বাহিকতায় গতকাল রোববার সকাল ১১টার দিকে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসাইন সরাইল থানা, হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সেখানকার চারিদিকে অবৈধ স্থাপনা সমূহ উচ্ছেদে নামেন। উচ্ছেদের কাজে বেকু ব্যবহার করে প্রায় দেড় ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করেন। গুড়িয়ে দিয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা। পথচারী, সিএনজি চালক ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলেছেন। অনেকে বলছেন, উচ্ছেদের কিছু দিন পরই ইসলামী দলের স্থানীয় প্রভাবশালী জনৈক নেতা ও আরেক যুবলীগ নেতার ছত্রছায়ায় আবারও দখল হয়ে যায়। শুধু উচ্ছেদ নয়, দখলদারদের বিরূদ্ধে মামলা করতে হবে। দোকান প্রতি দৈনিক চাঁদা উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। তারা জানতে চান, পশ্চিম পাশের সওজের জায়গার অধিকাংশ অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ না করার কারণ কী? সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, অবৈধ দখল দোকান নির্মাণ ও গাড়ি পাকিং এর কারণে পথচারীদের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছিল। মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে দূর্ঘটনা এড়াতে আমাদের এই ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।