পাকিস্তানে সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা: নিহত ১৮, আহত বহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশ: ৫ মার্চ, ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম
পাকিস্তানে সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা: নিহত ১৮, আহত বহু

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু শহরে সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত এবং বহু লোক আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ৫ জন সামরিক বাহিনীর সদস্য রয়েছেন।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় ইফতারের সময় দুই আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি সামরিক স্থাপনার প্রাচীরে আঘাত করে। বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের পরপরই পাঁচ থেকে ছয়জন অস্ত্রধারী সামরিক স্থাপনার ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে, তবে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় তারা সফল হতে পারেনি।

বিস্ফোরণের পরপরই নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলি শুরু হয়। এতে ছয়জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। হামলার দায় স্বীকার করেছে হাফিজ গুল বাহাদুর নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে বিস্ফোরকভর্তি দুটি গাড়ির মাধ্যমে এই হামলা চালানো হয়েছে।

বান্নু হাসপাতালের মুখপাত্র মোহাম্মদ নওমান জানিয়েছেন, হামলায় নিহতদের মধ্যে সাতজন শিশু, তিনজন নারী এবং তিনজন বেসামরিক পুরুষ রয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩২ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের চিকিৎসা চলছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “রমজানের মতো পবিত্র মাসে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা কাপুরুষোচিত কাজ। পাকিস্তানের শত্রুদের এই ষড়যন্ত্র কখনো সফল হতে দেওয়া হবে না।”

ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরো এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায়। এদিকে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই হামলার নেপথ্যে আফগান সংযোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা নিশ্চিত যে এই হামলার পরিকল্পনা আফগানিস্তান থেকে করা হয়েছে এবং সেখান থেকেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

সম্প্রতি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জঙ্গি হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে, তালেবান সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলো দেশটির সামরিক ও নিরাপত্তা স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করছে।