জরাজীর্ণ ভবনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে দিনাজপুরের খানসামা থানা পুলিশের কার্যক্রম। ভবনের রুমের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ে ইট বের হয়েছে। ছাদের ঢালাই খসে পড়ছে, নষ্ট হয়ে গেছে ব্যবহৃত রড। দেয়ালজুড়ে বড় বড় ফাটল। মাঝে-মধ্যেই খুলে পড়ে পলেস্তারা। এমনই জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে থানা পুলিশকে। এখনও ভবনটি ব্যবহার করা হচ্ছে বহাল তবিয়তে। এমন বেহাল অবস্থার কথা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিকভাবে পুলিশ বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে। অথচ তাঁরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কের মধ্যদিয়ে জরাজীর্ণ ভবনে বসে থানার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। থানা ভবনের যে অবস্থা তাতে যেকোনো মূর্হুতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা ভূমিকম্প হলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮৯১ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে এ থানা ভবনটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ৮০ দশকে নির্মাণ করা হয় বর্তমান থানা ভবনটি। কালের পরিক্রমায় সে ভবনটিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। দিনরাত সাধারণ মানুষের সেবা দিয়ে একটু শান্তিতে ব্যারাকে ঘুমাতে পারেন না থানা পুলিশের সদস্যরা।
সরজমিন দেখা গেছে, বাইরে থেকে ঝকঝকে-ফিটফাট মনে হলেও ভিতরের বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। দ্বিতল বিশিষ্ট থানার এ ভবনটিতে অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) কক্ষ। সিঁড়ি বেয়ে দো-তলায় উঠতেই চোখে পড়ে বড় ফাটল। ভবনটির প্রায় সব দেয়ালই স্যাঁতস্যাঁতে। অফিসাররা যেসব কক্ষে বসে দাপ্তরিক কাজ-কর্ম করছেন সেখানে ছাদের ঢালাই ভেঙ্গে রড বের হয়ে গেছে।
থানায় সেবাগ্রহণ করতে আসা সাজু ইসলাস বলেন, আমাদের থানার অবকাঠামোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বাইরে থেকে চকচক করলেও ভিতরের অবস্থা একেবারেই নাজেহাল। আমি দ্রুত এ থানা ভবনের সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি। আরেক সেবাগ্রহীতা হেলালউদ্দিন বলেন, আমি কয়েকবার এ থানায় এসেছি। ভবনটি এখনও ঠিক করা হয়নি। এখানে আসলে ভয়ে থাকি। না জানি কখন ভেঙ্গে যায়।
খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নজমূল হক বলেন, বর্তমানে থানা ভবনের নাজেহাল অবস্থা। ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফেটে গেছে। সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার জায়গা ফেটে গেছে এবং ভবনের অনেক পিলার নষ্ট হয়ে গেছে। অফিসার্স ফোর্সের জন্য কোনো ডরমেটরি বা কোয়ার্টারও নেই। নতুনভাবে ভবন তৈরি করা হলে ভালো হতো। নতুন করে ভবন তৈরি করা না গেলে, এসব দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।