বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) ধারা আবারও ঊর্ধ্বমুখী। চলতি মার্চ মাসের প্রথম ১৫ দিনেই দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ হাজার ২০৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। এই গতি বজায় থাকলে মার্চ মাসের শেষ নাগাদ রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে, যা হবে দেশের ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রমতে, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দেশ থেকে অর্থপাচার কমে গেছে। পাশাপাশি, হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর প্রবণতাও হ্রাস পেয়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে প্রবাসীরা তাদের স্বজনদের জন্য বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন, যা রেমিট্যান্স প্রবাহকে ত্বরান্বিত করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চের প্রথম ১৫ দিনে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল নিম্নরূপ:
• রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে: ৩৭ কোটি ১১ লাখ ডলার
• বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে: ১৩ কোটি ডলার
• বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে: ১১৫ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার
• বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে: ৩১ লাখ ডলার
অন্যদিকে, সাতটি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫৫ কোটি ডলার বেশি।
এর আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ফেব্রুয়ারি মাসে, যার পরিমাণ ২৫৩ কোটি ডলার।
একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের আগের রেকর্ড ছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ডলার। তবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ।