চিলাহাটি এক্সপ্রেসের বগি লাইনচ্যুত, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম
চিলাহাটি এক্সপ্রেসের বগি লাইনচ্যুত, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ

গাজীপুরের সালনা এলাকায় চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। রোববার (১৩ এপ্রিল) বেলা ২টা ৪০ মিনিটে ঢাকা-টাঙ্গাইল রেলপথে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ঢাকাগামী ট্রেনটি নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশন থেকে ছেড়ে আসার পর গাজীপুরের সালনা এলাকায় পৌঁছালে আকস্মিকভাবে চারটি বগির চাকা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের গতি কম থাকায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জয়দেবপুর রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নাদিরুজ্জামান বলেন, “চিলাহাটি এক্সপ্রেসের চারটি বগির চাকা লাইনচ্যুত হয়েছে। এ কারণে আপাতত উত্তরবঙ্গমুখী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি।”

একই তথ্য জানিয়েছেন জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার আবুল খায়ের চৌধুরী। তিনি বলেন, “চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি সালনা ব্রিজ এলাকায় আসামাত্রই একটি বগির চাকা লাইনচ্যুত হয়, এরপর একে একে আরও তিনটি বগি ট্র্যাক থেকে ছিটকে পড়ে। এতে যমুনা সেতু হয়ে চলাচলকারী উত্তরবঙ্গমুখী সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।”

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা বেগম জানান, দুর্ঘটনার পর দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করতে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে একটি রিলিফ ট্রেন পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হলেই রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

অন্যদিকে, ট্রেনটিতে দায়িত্ব পালন করা টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) আব্দুল আলিম বলেন, “সালনায় দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের গতিবেগ শিকল টেনে থামিয়ে দেওয়া হয়, ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও কেউ আহত হয়নি।”

এ দুর্ঘটনার ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি ট্রেন আটকে পড়েছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে রেল কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে কাজ করছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কী কারণে বগি লাইনচ্যুত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। লাইনচ্যুতির কারণ হিসেবে রেললাইন সংস্কারের ঘাটতি, অতিরিক্ত লোড কিংবা যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনা রয়েছে।

রেল চলাচল কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে—এই প্রশ্নের জবাবে রেল কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার কাজের অগ্রগতি ও লাইনের অবস্থা পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে