উন্নয়নের নামে গাছ কাটা বন্ধ হোক

এফএনএস | প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
উন্নয়নের নামে গাছ কাটা বন্ধ হোক

গাছ আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাছপালা এবং গাছের কারণেই আমরা এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পেরেছি। বিকাশ হচ্ছে মানব সভ্যতার। গাছ শুধুমাত্র আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন নয়। গাছ অক্সিজেন ত্যাগ করে বলেই মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী বেঁচে থাকে। গাছ আমাদের খাদ্য ও আশ্রয় দেয়। অনেক গাছে ফল ধরে যা পাখি ও অন্যান্য প্রাণী খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। মানুষও বিভিন্ন ফল যেমন- আম, আপেল এবং কলাসহ বিভিন্ন ফলের স্বাদ গ্রহণ করে। গাছের পাতা ও বাকল ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। গাছ পশুপাখি ও মানুষকে আশ্রয় দেয়। বিশাল ঘনগাছ ও গাছ-পালা ভরা অরণ্য বন্যপ্রাণী ও পাখিদের আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে এবং সমৃদ্ধ জীব-বৈচিত্র্যের দিকে অবদান রাখে। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হলো অক্সিজেন। আমরা এই অক্সিজেন গাছ থেকে পেয়ে থাকি এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করি। এখন যখন দেশব্যাপী প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ চলছে, তখন পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে একমাত্র গাছই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু উন্নয়ন নামক নানা প্রকল্প গ্রহণ করতে গিয়ে পরিবেশ রক্ষাকারী গাছকেই কেটে ফেলা হচ্ছে। এ ধরনের গাছ কাটার উদ্যোগ কোনোভাবেই পরিবেশের তো উপকার করবেই না; বরং এটিকে পরিবেশ ধ্বংস করার নতুন অপতৎপরতা বলতে হবে। রাজধানীসহ সারাদেশে উন্নয়নের নামে এভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে সবুজ। সারা দেশে নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে জলাভূমি ও সবুজবলয় ধ্বংস হচ্ছে। প্রাকৃতিক বৈচিত্রের বিলুপ্তির কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। এ কারণে তীব্র তাপদাহ চলছে।উন্নয়নের নামে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট এবং প্লাস্টিক-বর্জ্য উৎপাদনের কারণে আমাদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। ২৫ ভাগ বনভূমি থাকার কথা থাকলেও দেশে মাত্র ১৫ ভাগ বনভূমি আছে, যার অধিকাংশই নানাভাবে সংকটাপন্ন। প্রকল্পের পর প্রকল্পের করাতে কাটা পড়েছে বৃক্ষরাজি। আর উধাও হয়ে যাচ্ছে গাছের ছায়া। খাতা-কলমে একটি কাটলে তিনটি গাছ লাগানোর কথা। তবে রাজধানীতে কোথায়, কত বিকল্প গাছ লাগানো হয়েছেু তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। তাপদাহ যখন ঢাকাকে পোড়াচ্ছে, ঠিক তখন গাছ কাটার বিষয়টি নগরবাসীর মনে দাগ কেটেছে। ষাটের দশক থেকে রাজধানীর পরিধি ব্যাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে সবুজ ক্রমেই ধূসর হয়ে এসেছে। নৃশংসভাবে গাছ কেটে যে নগরায়ণ করা হয়েছে তার বিরূপ প্রভাব এখন আমরা ভোগ করছি। শব্দদূষণ, মারাত্মক বায়ুদূষণ ও অসহনীয় তাপমাত্রা রাজধানীকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে। উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের নামে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে এবং কাটা গাছের স্থানে দেশীয় বৈচিত্র্যময় প্রজাতির বৃক্ষবলয় গড়ে তুলতে হবে।