তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিনের মুক্তির দাবীতে উত্তাল নীলফামারী

এফএনএস (আব্দুর রাজ্জাক, নীলফামারী) : | প্রকাশ: ৬ মে, ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম
তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিনের মুক্তির দাবীতে উত্তাল নীলফামারী

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাতো ভাই নীলফামারী-০১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও নীলফামারী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের মুক্তির দাবীতে উত্তাল হয়ে উঠেছে তার নিজ জেলা নীলফামারী। তুহিনের মুক্তির দাবীতে আজ মঙ্গলবার সকাল হতে জেলার সকল উপজেলা হতে মিছিল সহকারে জেলা শহরে সমবেত হতে থাকে নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে দুপুরের পর মিছিলের শহরে পরিনত হয় নীলফামারী। বন্ধ হয়ে যায় জেলা শহরের যান চলাচল। জেলা কার্যালয়ে সমবেত নেতা কর্মীদের নিয়ে জেলা বিএনপি’র সভাপতি আলমগীর সরকারের নেতৃত্বে বিএনপি ও তার সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা জেলা শহরে মিছিল শেষে ডিসি’র মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর তুহিনের মুক্তির দাবীতে স্বারকলিপি প্রদান করে বিএনপি। মিছিল, সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, জেলা বারের সাধারন সম্পাদক ও পিপি এ্যাডŦ আল মাসুদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোর্শেদ আজম, ডোমার উপজেলা সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আখতারুজ্জামান, ডোমার পৌর সভাপতি আনিছুর রহমান, সাধারন সম্পাদক মোজাফফর আলী, ডিমলা সভাপতি অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন, সাধারন সম্পাদক বদিউজ্জামান, জলঢাকা উপজেলা শাখার সভাপতি, সাধারন সম্পাদক সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। 

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা তুহিনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করেন। তাকে মুক্তি না দিলে রংপুর বিভাগ অচল করে দেওয়ার হুশিয়ারি দেন নেতাকর্মীরা। তারা জানান, একই মামলায় অপরাপর আসামীরা জামিনে মুক্ত রয়েছে। সরকার হীন স্বার্থে তাকে আটকে রেখেছে বলে তারা দাবী করেন। ডোমার উপজেলা সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম আমার দেশ কে জানান, প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। তার জনপ্রিয়তার কারণে ১/১১ সময় তুহিন ভাইয়ের নামে ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করা হয়। ১/১১ সরকার গঠিত হয়েছে জিয়া পরিবারকে ধংস করার জন্য। যদি তুহিন ভাইকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে রংপুর বিভাগ অচল করে দেয়া হবে।

জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে নীলফামারী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরীকে নীলফামারী জেলার উন্নয়নের রুপকার হিসাবে জেলাবাসীর কাছে পরিচিত। ৪ দলীয় জোট সরকারের সময় এ জেলায় তিনি ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত করেন। তিনি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যাসোসিয়েসন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) মহাসচিব। যার সভাপতি ছিলেন, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ১/১১ সরকারের দুদক প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে তার বিরুদ্ধে সে সময় কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে গুলশান থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। এর ফলে ২০০৭ সালে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। দীর্ঘ ১৮ বছর প্রবাস জীবন কাটান তিনি। এ সময় তার স্ত্রী প্রবাসে মারা গেলেও তিনি দেশে এসে দাফন কাফনে অংশ নিতে পারেননি। জুলাই গন-অভ্যুথ্বানের পর ২২ শে এপ্রিল দেশে আসেন তিনি। রায় ঘোষণার দীর্ঘ ১৮ বছর পর তিনি গত ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর মধ্যে কর ফাঁকির মামলায় ২০০৮ সালে পৃথক দুটি ধারায় ৩ বছর ও ৫ বছরসহ মোট ৮ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বিধায় তাকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। এছাড়া অবৈধ সম্পদের মামলায় ২০০৮ সালে তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে