ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি

৩টি পৃথক মামলায় ২৬ জন আসামী’সহ অজ্ঞাতনামা আসামী ৩৪-৪২ জন

এফএনএস (মোঃ আতিউর রহমান; বিরল, দিনাজপুর) : | প্রকাশ: ১২ মে, ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
৩টি পৃথক মামলায় ২৬ জন আসামী’সহ অজ্ঞাতনামা আসামী ৩৪-৪২ জন

বিরল পৌর-শহরে একইদিনে ৩ দফায় পৃথক পৃথক মারপিটের ঘটনায় ৩টি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। দায়েরকৃত ৩টি মামলায় মোট এজাহার নামীয় ২৬ জন আসামী’সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩৪-৪২ জনকে আসামী করা হয়েছে। একই দিনে কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রপ্রতিনিধি ও বিএনপি’র একাংশের নেতাকর্মীদের নামে মামলা হওয়ায় উপজেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রপ্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম মন্টুর মামলায় এজাহার নামীয় আসামী করা ৮ জন এবং অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে ১৪-১৫ জনকে ও আহত রয়েছে ১ জন। কুলিশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওয়াকিউল ইসলাম এর মামলায় এজাহার নামীয় আসামী ৯ জন এবং ৫-৭ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে ও আহত রয়েছে ২ জন। ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রবিউল ইসলামের দায়েরকৃত মামলায় এজাহার নামীয় আসামী ৯ জন এবং ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে ও আহত রয়েছে ৫ জন।

বিরল থানায় দায়েরকৃত এজাহারে মনিরুল ইসলাম মন্টু জানান, উপজেলার পুরিয়া গ্রামের মৃত রমজান আলী এর ছেলে ৫নং বিরল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম (৩৫), অজ্ঞাত ব্যাক্তির ছেলে সঞ্জু মেকার (৩৫) ও মোঃ জাহাঙ্গীর বাবু (৪০),  বিরল ধজিরপাড়ার মৃত আব্দুল এর ছেলে মোঃ কামরুজ্জমান ভোলা (৩৮), বিরল কলেজপাড়ার মোঃ হাফিজ উদ্দীন এর ছেলে মোঃ ওয়াকুল ইসলাম (৩৫), পুরিয়া গ্রামের মোঃ মোখলেছুর রহমান এর ছেলে মোঃ হাফিজুর রহমান (২৭), জোড়কালি গ্রামের মোঃ ইসকান্দার (৫০), বিরল ধজিরপাড়ার মৃত আব্দুল জব্বার এর ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান (৪৫)সহ আরো ১৪/১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি রডিবউল ইসলামসহ তার সহযোগী উল্লেখিতগনেরা গত ৫ আগস্ট-২০২৫ ইং তারিখ আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে বিরল উপজেলার বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষদের দোকান ও বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে এছাড়া রবিউল ইসলাম দলীয় মামলার বাদী হয়ে সাধারণ মানুষদের নামে মামলা দিবে বলে এজাহার দায়ের করে তাদেরকে এজাহারে নাম দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদার টাকা আদায় করে নিয়ে এজাহারের নাম কর্তন করে। শুধু তাই নয় উপরোক্ত ১নং আসামী বিরল থানাধীন শিবপুর এলাকার মালিকানাধীন জনৈক মোঃ বেলাল হোসেন এর ঠিকা (চুক্তি) নেয়া পুকুর খননের কাজে বাঁধা দেয় এবং সে নিজেকে জুলাই-আগষ্টের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে জনৈক মোঃ বেলাল হোসেন এর কাছে নগদ চল্লিশ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে ভূক্তভোগী বেলাল হোসেন জুলাই-আগষ্টের আন্দোলনের বিরল উপজেলার ছাত্র প্রতিনিধিদের কাছে অবগত করলে রবিউল ইসলাম ঘটনার বিষয়ে ভুল স্বীকার করে এবং আর কোনদিন এরকম কাজ করবে না মর্মে স্বীকার ও অঙ্গীকার করলে ঘটনার বিষয়ে আপোষ মিমাংসা হয়। আপোষ মিমাংসা হওয়ার পর থেকে সকল আসামীগনেরা আমাকে’সহ বিরল উপজেলার অন্যান্য ছাত্র প্রতিনিধিদের মারপিট করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে। আমি ও মোঃ মামুনুর রশিদ হুজুর উভয় বিরলে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে শেয়ারে বা অংশিদারি ব্যবসায়ী অনুযায়ী দোকানের নাম মদিনা টেলিকম দিয়ে মোবাইল, ইয়ারফোন, ব্যাটারি, চার্জার’সহ অন্যান্য মালামাল বিক্রয়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। এমনিভাবে চলাকালিন উপরোক্ত সঞ্জু মেকার মার্চ মাসে ২০২৫ইং সালের রমজান মাসে একটি স্মার্ট রেডমি ১০ মোবাইল ফোন ক্রয় করার জন্য আসে। মোবাইলটি দেখে দরদাম করে মোবাইলটির মোট মূল্য আট হাজার পাঁচশত টাকা নির্ধারণ হয়। তখন সঞ্জু মেকার বলে তার কাছে সম্পূর্ন টাকা নাই সে মামুনুর রশিদ হুজুর’কে নগদ দুই হাজার টাকা দেয় এবং কিছুদিন পরে আবারো মামুনুর রশিদ হুজুর কে এক হাজার টাকা দেয় এবং অবশিষ্ট পাঁচ হাজার পাঁচশত টাকা দেয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় নেয়। এভাবে সঞ্জু মেকার তার দেয়া সময় অনুযায়ী টাকা না দেয়াতে মামুনুর রশিদ হুজুর পুনরায় সঞ্জু মেকারকে বিরল বাজারে দেখতে পেলে তার কাছে মোবাইল বিক্রি করা পাওনাকৃত পাঁচ হাজার পাঁচশত টাকা চাইলে সে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য আবারো সময় নেয়। তখন মামুনুর রশিদ হুজুর আমাকে ঘটনার বিষয়ে অবগত করলে আমি গত ০৬ মে-২০২৫ইং তারিখ সঞ্জু মেকারকে বিরল থানাধীন বিরল বাজারে তার মোটরসাইকেল মেকার দোকানে তাকে দেখতে পেয়ে আমাদের দোকানের পাওনাকৃত টাকা চাইলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আবারো টাকা পরিশোধ করার জন্য সময় নেয়। পরবর্তীতে তার দেয়া সময় অনুযায়ী গত ইং ১০ মে-২০২৫ তারিখ রাত ৬.৩০ টায় আমি সঞ্জু মেকারকে বিরল বাজারে তার দোকানের সামনে তাকে দেখতে পেয়ে আমাদের দোকানের পাওনাকৃত টাকা চাইলে রবিউল ইসলামের কু-পরামর্শে সঞ্জু মেকার টাকা দিতে অস্বীকার করে। তখন আমি সঞ্জু মেকারকে বলি আমাকে আমাদের পাওনাকৃত টাকা দেন তা নাহলে মোবাইলটি ফেরত দেন। তখন রবিউল ইসলাম আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ আমাকে মারপিট করার চেষ্টা করে এবং বলে তোকে মোবাইলের টাকা দেয়া হবে না এবং মোবাইলও ফেরত দেয়া হবে না কি করার আছে করতে বলে। আমি প্রতিবাদ করলে উপরোক্ত ১ ও ২নং আসামীদ্বয় মোঃ মানুনুর রশিদ হুজুরকে বকেয়া টাকা সম্পূর্ন পরিশোধ করে দেয়। সঞ্জু মেকার মোবাইল ক্রয় করার টাকা পরিশোধ করার পরে একই তারিখ রাত আনুমানিক ৯.৩০ টায় রবিউল ইসলাম ও সে অন্যান্যদের ফোন করে ডেকে আনলে উল্লেখিত সকলে একই উদ্দেশ্যে বেআইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে হাতে লাঠি সোঠা, লোহার রড, ধারালো হাসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, সাবল, এসএসপাইপ’সহ ইত্যাদি দেশিয় অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে আমাদের মোবাইল দোকানে এসে দোকান ভাংচুর করার চেষ্টা করে। সেই সময় আমিসহ স্থানীয় লোকজন আমাদের মোবাইল বিক্রয়ের দোকান ভাংচুর করার বাঁধা করলে রবিউল ইসলাম হুকুম দিয়ে বলে বেটা শালাকে মেরে লাশ বানিয়ে দাও। উক্ত হুকুম পাওয়া মাত্রই উপরোক্ত সকল আসামীগনেরা আমাকে এলোপাথারিভাবে কিল ঘুষি মারপিট বুকে, পিঠে, হাত, পা, মাথা, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা ও কালোশিরা জখম করে এবং রবিউল ইসলাম আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে এবং সঞ্জু মেকার আমার পড়নের জিন্সের পেন্টের ডান পকেটে থাকা ব্যবসার নগদ আটাশি হাজার আটশত টাকা অসৎ উদ্দেশ্যে নিয়ে নেয়। আমি ডাক চিৎকার করলে রবিউল ইসলামের হাতে থাকা লোহার রড দ্বারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে আমি বুঝতে পেরে সরে গেলে উক্ত আঘাত থেকে প্রাণে রক্ষা পেলেও পূণরায় আমার মাথায় আঘাত করে ফুলা ও কালোশিরা জখম করে এছাড়া সঞ্জু মেকারের হাতে থাকা লোহার রড দ্বারা আমার পিঠে আঘাত করে ফুলা ও কালোশিরা জখম করে। আমাকে মারপিট করার বিষয়টি বিরল উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধিরা জানতে পেরে আমাকে রক্ষা করার জন্য আসলে উল্লেখিতরা ছাত্র প্রতিনিধি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মোঃ জিসান, মোঃ মেহেদী, মিদুল, হারুন, শিশির, নাহিদ, নয়ন’সহ আরো অন্যান্যদের এলোপাথারিভাবে কিল ঘুষি মারপিট করে বুকে, পিঠে, হাত, পা, মাথা, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা ও কালোশিরা জখম করে। সেই সময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে উপরোক্ত সকল আসামীগনেরা লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে চলে যাওয়ার সময় আমাকেসহ আমার পরিবারের লোকজনকে বিভিন্ন প্রকার ভয় ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে চলে যায়। আমাকে আহত অবস্থায় ছাত্র প্রতিনিধিরা ভ্যানযোগে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসাপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করায়। পরবর্তীতে একই তারিখ রাত আনুমানিক ১০.৩০ টায় উল্লেখিত সকলেরা দেশিয় অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার বাড়ী বিরল ধজিরপাড়া গিয়ে বাড়ী ভাংচুর করার চেষ্টা চালায়। সে সময় স্থানীয় গ্রামবাসী সকলেই বাড়ী থেকে বাহির হলে উল্লেখিতরা লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনার বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিলে উল্লেখিত সকলেরা বিষয়টি জানতে ও বুঝতে পেরে আমাকে মারপিট করার জন্য ৩০/৩৫ জন গুন্ডা ভাড়া করে হাতে লাঠি সোঠা, লোহার রড, হাসুয়া, দা, ইত্যাদি দেশিয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে থানার আশে পাশে ঘোরা ফেরা করে। আমি থানায় অভিযোগ বা মামলা করলে উল্লেখিত ব্যাক্তিরা তাদের ভাড়া করা গুন্ডাবাহিনী দিয়ে আমাকে দেখা পাওয়া মাত্রই হত্যা করবে মর্মে চিৎকার চেচামেচি করে। উল্লেখিতরা যে কোন সময় যে কোন মহুর্তে আমাকে সহ আমার পরিবারের লোকজনকে রাস্তা ঘাটে একাকি দেখতে পেলে মারপিট করা’সহ হত্যা করে লাশ গুম করার আশু সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, মোঃ ওয়াকিউল ইসলাম এজাহারে জানান, বিরল কামারপাড়ার মোঃ আব্দুস সাত্তার এর ছেলে মোঃ হারুন (২২), কাজীপাড়ার মৃত আশরাফ ওরফে ডেলিয়া এর ছেলে মোঃ আব্দুল খালেক (৪৫), ৩। বিরল কলেজপাড়ার মৃত সামসুল এর ছেলে মোঃ আলম (৩৭),  বিরল ধজিরপাড়ার মৃত মঙ্গলুর ছেলে মোঃ আব্দুল আলিম ওরফে ভাগরুম (৪৫), বানিয়াপাড়ার মৃত আব্দুস সামাদ এর ছেলে মোঃ বাবু ওরফে কালাবাবু (৪০), কামারপাড়া মৃত আব্দুর রহমান এর ছেলে মোঃ নান্টু (৪৫),  বিরল হাসপাতালপাড়ার মৃত আবেদ আলী এর ছেলে মোঃ মাসুদ (৩৫), বিরল শাহাপাড়ার মোঃ মোতাহার এর ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৪০), বিরল মোতাপুকুরের মৃত কবির এর ছেলে মোঃ মজনু (৪৫)সহ আরও ৫/৭জন এর বিরুদ্ধে এই মর্মে লিখিত এজাহার করছি যে, আমি বিরল থানাধীন কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং-রাজ ১৩৪৩, এর সভাপতি। ইং ১০ মে-২০২৫ তারিখ দুপুর ১.৩০ টায় আমি এবং উক্ত বিরল কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান ওরফে ভোলা (৩৮)’সহ বিরল থানা সংলগ্ন জনৈক ছপ্পর আলীর চায়ের দোকানে অবস্থান করার সময় মোঃ হারুন উল্লেখিত ব্যাক্তিদের সাথে নিয়ে দলবদ্ধভাবে আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে এই বলে চাঁদা দাবি করে যে, বিরল থানার প্রত্যেক দশ চাকা বিশিষ্টি গাড়ী প্রতি লোড ও আনলোড বাবদ তিনশত পঞ্চাশ টাকা এবং ছয় চাকা গাড়ী প্রতি দুই শত টাকা দিতে হবে মর্মে হুমকি দেয়। সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান ওরফে ভোলা উল্লেখিত ব্যাক্তিদেরকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সকলে একযোগে অসৎ উদ্দেশ্যে তাকে এলোপাথারী কিল ঘুশি মারতে থাকে। আশেপাশের অবস্থানরত সাক্ষীসহ আশেপাশের আরও অনেকে এগিয়ে এসে তাদের নিকট হতে ভিকটিমকে ছেড়ে দিলে আসামীগণ আমাদেরকে উদ্দেশ্যে করে বিভিন্ন মারপিটের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল হতে চলে যায়। অতঃপর ঘটনার একই তারিখ অনুমান দুপুর ২.৩০ টায় বিরল বাজারে জনৈক আনারুলের চায়ের দোকানে আমি আমার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন কমিটির আরো সদস্য এবং সাধারণ সদস্যগণদের সাথে আলোচনা করার সময় উপরোক্ত আসামীগণ পুণরায় হাতে লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সকলে একই উদ্দেশ্যে বে-আইনী জনতায় দলবদ্ধ হইয়া হঠাৎ আমার ও বাকি সদস্যগণদের উপর অতর্কিত হামলা করে। উল্লেখিতদের মধ্যে মোঃ নান্টু (৪৫) আমার পড়নের শার্টে কোলার ধরে টানা হেচড়া শুরু করলে মোঃ আব্দুল খালেক আমার কোমড়ে লুঙ্গিতে গুজে রাখা গরু ক্রয়ের নগদ পঞ্চান্ন হাজার টাকা অসৎ উদ্দেশ্যে ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাস্থলে থাকা সদস্য মোঃ গামা (৩৫)’কে উল্লেখিতরা লাঠিসোটা দ্বারা এলোপাথারী মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিলা, ফুলা ও কালোশিরা জখম করে। উল্লেখিতরা আমাদের উপরে বেধড়কভাবে হামলার পরপরই আশেপাশের লোকজন ও দোকানদারগণকে এগিয়ে আসতে দেখে অভিযুক্তগণ দ্রুত ঘটনাস্থল হতে চলে যায়। অতঃপর অভিযুক্তগণ চলে যাওয়ার সময় তাদের চাঁদা না দিলে কোন গাড়ী হতে লোড আনলোডের কাজ করতে দিবে না এবং চাঁদা না পেলে ভবিষ্যতে আরও বিশৃংখলা ও মারামারির ঘটনা ঘটাবে মর্মে হুমকি প্রদর্শন করে। বর্তমানে তাদেরকে বর্ণিত চাঁদা না দিলে ভবিষ্যতে আরও বিশৃংখলা ও কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের ক্ষতিসাধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে মোঃ রবিউল ইসলাম এজাহারে জানান, ইং ১ মে-২০২৫ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পুরিয়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীন এর ছেলে আমার প্রতিবেশী মোঃ শফিকুল ইসলাম সজু (৩৮) বিরল বাজারস্থ মদিনা টেলিকম এর মোবাইল দোকানদার মোঃ মামুনুর রশীদ এর দোকান হতে আট হাজার টাকা মূল্যের মোবাইল ফোন বাবদ নগদ পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে বাকি তিন হাজার টাকা বকেয়া সংক্রান্ত বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে বকেয়া পরিশোধ করতে গেলে দোকানদার মোঃ মামুনুর রশীদ মোবাইল ফোনে বিরল (বাজার) এর আব্দুল বাসেদ এর ছেলে মোঃ মুজাহিদ হোসেন (২৫), বিরল (ধজিরপাড়া) এর মোঃ সারোয়ার হোসেন এর ছেলে মোঃ মনিরুল ইসলাম মন্টু (২৪),  বিরল (কামারপাড়া) এর আব্দুস সাত্তার এর ছেলে মোঃ হারুনুর রশিদ (২৮),  শংকরপুর গ্রামের মোঃ তোফাজ্জল হোসেন এর ছেলে মোঃ মৃদুল হাসান (২৫),  ওকড়া গ্রামের মৃত হবিবর রহমান এর ছেলে মোঃ মোকাম্মেল (৩২), শংকরপুর গ্রামের মোঃ মোতাহার হোসেন এর ছেলে মোঃ রেজোয়ান হোসেন (২৬), পিপল্যা (ধুকুঝাড়ী) গ্রামের মোঃ ফরহাদুল ইসলাম সানি (২১), ভবানীপুর (বানিয়াপাড়া) গ্রামের মৃত মোবেল এর ছেলে মোঃ বাবু কালা বাবু (৩০), শংকরপুর গ্রামের মোঃ আশরাফুল ইসলাম এর ছেলে মোঃ শিশির (৩০)সহ আরোও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনসহ সকলেই আওয়ামীলীগ সমর্থিতদের ডেকে আনে। উল্লেখিতগণ দলবদ্ধ হয়ে মোবাইল দোকানদারের বিষয়টি তাদেরকে না জানিয়ে মোঃ শফিকুল ইসলাম সজু একা কেন মিমাংসা করতে আসছে প্রশ্ন করে মারধর শুরু করে তার পরিহিত প্যান্টের বাম পকেটে থাকা মোটরসাইকেল বিক্রির নগদ পঞ্চাশ হাজার জোরপূর্বক মোঃ মুজাহিদ হোসেন ছিনিয়ে নেয়। মারধর দেখে মোঃ শফিকুল ইসলাম সজু এর বড় ভাই ভিকটিম মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৪৬) এগিয়ে আসলে তাকেও আসামীগণ মারধর করে তার শার্টের বুকের ভিতরের পকেটে থাকা নগদ কুড়ি হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। মারধর থেকে জীবনে বাঁচার তাগিদে ভিকটিম জাহাঙ্গীর আলম আমার মাধ্যমে দোকানদারের সাথে বকেয়া পরিশোধের জন্য আলোচনা সাপেক্ষে কথা হয়েছে জানালে আসামীগণ সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে রাত্রী আনুমানিক ৯ টা হতে সাড়ে ৯ টার মধ্যে বিরল উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে এসে আমাকে দাড়ানো দেখে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি’র চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান’সহ বিএনপি’কে উদ্দেশ্য করে উশৃঙ্খলভাবে অশালীন/অকথ্য ভাষায় কথাবার্তা বলতে থাকে এবং তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র যেমন- রামদা, হাসুয়া, লোহার রড, সামুরাই, হকিস্টিক ইত্যাদি নিয়ে বিএনপি অফিসের মূল গেটের সামনে থাকা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি’র চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি’র ভারাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান’সহ বিএনপি’র প্রচার-প্রচারণার বিভিন্ন রকম পোষ্টার ছিড়ে ফেলতে থাকে। এমতাবস্থায় আমি তাদের বাঁধা দিতে গেলে তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এগিয়ে এসে মোঃ হারুন আমার গলা চেপে ধরলে সাথে সাথে মোঃ মুজাহিদ হোসেন, মোঃ মনিরুল ইসলাম (মন্টু)’সহ অনেকেই আমাকে কিল-ঘুষি মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয়। আমি বাঁচার জন্য চিৎকার করতে থাকলে পুরিয়া গ্রামের শাহের মোহাম্মদ এর ছেলে মোঃ বাছেদুর রহমান (৩৮),  বিরল (শাহাপাড়া) গ্রামের মোঃ হাফিজ উদ্দীন এর ছেলে মোঃ আসাদুল হক হীরা (৩৫)গণ’সহ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও কিল-ঘুষি মারতে থাকলে স্থানীয় লোকজন উল্লেখিতদেরকে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে আমাকে স্থানীয় লোকজন বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে