রাজশাহীর তানোরে দূর্নীতি বিরোধী উপজেলা কমিটির সভাপতি ও এক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ সম্প্রতি ২৭ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ে দায়ের করা হয়। ফলে রাজশাহী দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তানোর পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুনুর রশিদ বাদি হয়ে একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম মুন্টুর বিরুদ্ধে দুদকে এক অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম রাজশাহীর তানোর উপজেলা দূর্নীতি বিরোধী উপজেলা কমিটির সভাপতি ও একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এমন দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে কিভাবে কমিটির সভাপতি করা হয় এমন নানা প্রশ্নে লোকসমাজে সমলোচনা চলছে।
প্রসঙ্গ, বিগত ২০০৩ সালের ১২ মে জনবল কাঠামোতে ১৯৯৫ অনুযায়ী নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ওই মাসের ১৭ তারিখে ১৫(২) স্মারকে দায়িত্ব পালন অবস্থায় জনবল কাঠামো (২০১০ হতে ২০১৩) সাল পর্যন্ত সংশোধিত হয়ে সামাজিক বিজ্ঞান/ব্যবসায় শিক্ষাপদে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন হারুন মাস্টার। এঅবস্থায় জনবল কাঠামো ২০২১ নীতিমালা প্রণীত হলে বেতন ভাতা সমন্বয়ের মাধ্যমে এমপিও হওয়ার সুযোগ আসে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম হারুনের এমপিওর কাগজ না পাঠিয়ে ইংরেজি শিক্ষক নুরুল ইসলাম শাহের নিকট অবৈধ সুবিধা নিয়ে তাকে সামাজিক বিজ্ঞান পদে এমপিও করেন। যা সম্পূর্ণ ভাবে জালিয়াতি বা অবৈধ। যাহা নীতিমালা ও ব্যানবেইজ তথ্য বহির্ভূত এবং হারুনের পদটি শূন্য দেখায়। হারুন মাস্টার প্রধান শিক্ষককে বেতন ভাতার বিষয়ে বললে তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম।
হারুন মাস্টার বলেন- তিনি আবারও ১০ লাখ টাকা প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে দিলে চাকুরি থাকবে, নইলে স্কুল থেকে বিদায় হতে হবে। এঘটনায় অসহায় হারুন মাস্টার নিরুপাই হয়ে উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। তার প্রেক্ষিতে সরেজমিনে বিভাগীয় তদন্তের জন্য নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তদন্তে সত্যতা পেয়ে ওই সময়ের স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
হারুন মাস্টার আরও জানান, প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জাতীয় উপবৃত্তির কর্মসূচির টিউশান ফি নিজে নিয়ে অন্য শিক্ষকদের জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এমনকি চারজন শিক্ষকের সিনিয়র স্কেলের জন্য টাকা দাবি করেন, নইলে ছাড় হবে না বলেও সাব জানিয়ে দেন তিনি। প্রধান শিক্ষকের এমন অনিয়ম-দূর্নীতি আর জালিয়াতি ও চাঁদাবাজিতে অসহায় হয়ে পড়েছেন হারুন মাস্টার।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের যা খুশি করতে পারে। মানুষ জানে আমি চাঁদাবাজ না প্রতারক। কারো স্বার্থে আঘাত লাগলে এসব করবেই এটাই বাস্তবতা বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি।
এব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী জেলার উপ-সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমানের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ই/তা