২০০৪ সালের ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় নিহত হন দলটির ২৪ জন নেতাকর্মী। আহত হন কয়েক শতাধিক। এই হামলার সময় উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস সেই ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় একাধিক ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়ের বিপরীতে হাইকোর্টে আপিল শুনানি হয়, এবং পরবর্তীতে উচ্চ আদালত কিছু আসামিকে খালাস দেন—যার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।
প্রাসঙ্গিক সূত্র মতে, সোমবার (২৬ মে) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ নতুন করে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। এর আগে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তাঁর অনুপস্থিতির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে মঙ্গলবার (২৭ মে)।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের এই হামলার পর দুটি মামলা হয়—একটি হত্যা এবং অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত রায় দেয়। এতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
এই রায় উচ্চ আদালতের অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত এবং জেল আপিল করেন। এরপর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ব্যাপক শুনানি শেষে তারেক রহমান ও বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক দুটি ‘লিভ টু আপিল’ (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। চলতি বছরের ১৩ মার্চ চেম্বার আদালতে আবেদন দুটি ওঠে এবং সেগুলো নিয়মিত আপিল বেঞ্চে পাঠানো হয়। সর্বশেষ, ১৫ মে পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।