সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্টে বামপন্থীদের দায়ী করল ছাত্রশিবির

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৯ মে, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্টে বামপন্থীদের দায়ী করল ছাত্রশিবির

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদে নেমেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো। এসব বিক্ষোভে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে উসকানি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠলেও এবার পাল্টা বিবৃতিতে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন খান অভিযোগ করেন, বামপন্থী সংগঠনগুলো পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে এবং সহাবস্থানের সংস্কৃতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “গত দুই দিন যাবৎ আমরা দেখতে পাচ্ছি, তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের প্রথম সভাপতি এ টি এম আজহারুল ইসলামের বেকসুর খালাস পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় কারও মতপ্রকাশের অধিকার থাকলেও এই কর্মসূচিগুলোতে ছাত্রশিবিরকে টার্গেট করে স্পষ্ট সন্ত্রাসী ও হত্যাযজ্ঞের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”

ছাত্রশিবিরের ভাষ্য অনুযায়ী, বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত একটি মশালমিছিলে ‘বাঁশের লাঠি মিছিল হবে, শিবির তোমার মৃত্যু হবে’—এমন স্লোগান দেওয়া হয়েছে, যা তারা ‘সন্ত্রাসী বক্তব্য’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শিবিরের নেতারা অভিযোগ করেন, এই ধরনের বক্তব্য অতীতে স্বৈরাচারী সময়ের ‘পতিত ফ্যাসিবাদী রেটরিক’-এর পুনরাবৃত্তি এবং হত্যা বৈধ করার সুপ্ত প্রচেষ্টা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকায় মঙ্গলবার ও বুধবার রাতের বামপন্থী মিছিলগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। অথচ সেই প্রতিবাদকেই ছাত্রশিবির ট্যাগ দিয়ে আরও হুমকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে।”

ছাত্রশিবির অভিযোগ করে, শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি হিসেবে দেখা আসন্ন ডাকসু নির্বাচন বানচাল করতেই বামপন্থীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তাদের ভাষায়, “বামপন্থীদের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা না থাকায় তারা বরাবরই ডাকসু নির্বাচনকে অবজ্ঞা করে এসেছে। এখন অস্থিরতা সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্বাচনসংক্রান্ত অগ্রগতি থামিয়ে দিতে চাইছে।”

ছাত্রশিবির দাবি করে, শুধু বামপন্থী নয়, এই বিক্ষোভে ছাত্রদলের কিছু নেতা-কর্মীও অংশ নিচ্ছেন, যাঁদের বক্তব্য ছিল উসকানিমূলক। সংগঠনটি সতর্ক করে বলেছে, “ছাত্রসমাজ এসব চক্রান্তকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।”

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে