বাংলাদেশে সরকারি খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। শনিবার (১৪ জুন) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এ অর্থায়ন “স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি” বা সংক্ষেপে ‘সিটার’ প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত উন্নয়ন ও কার্যক্রমে ডিজিটাল রূপান্তর ঘটানো হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা বিভাগ, বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিএজি)।
সিটার প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো সরকারি তথ্য ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব আহরণ, ক্রয় প্রক্রিয়া ও আর্থিক নিরীক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি করা।
প্রকল্পের আওতায়—
• কর প্রশাসন আধুনিকীকরণ
• স্বেচ্ছায় কর প্রদানে উৎসাহ বৃদ্ধি
• রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি
• ই-জিপি’র (ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) দ্বিতীয় প্রজন্ম চালু
• নিরীক্ষা ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তর
• তথ্যনির্ভর ও নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান ব্যবস্থার উন্নয়ন
এইসব পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা এবং জবাবদিহিতা বাড়বে।
বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, “এই বিনিয়োগ সরকারের ডিজিটাল রূপান্তরকে উৎসাহিত করবে, যা দুর্নীতি হ্রাসে ভূমিকা রাখবে এবং জনগণের আস্থা ও সেবার গুণগতমান বাড়াবে।”
প্রকল্পের টিম লিডার এবং বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ সুলেমানে কুলিবালি বলেন, “একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গিতে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সংস্কার আনার মাধ্যমে সরকারের সামগ্রিক সক্ষমতা বাড়বে। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি।”
বিশ্বব্যাংক আরও জানিয়েছে, সিটার প্রকল্প ছাড়াও তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আরও একটি ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট (ডিপিসি) ঋণ নিয়ে আলোচনা করছে। এ ঋণ এ মাসের শেষ দিকে বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় উপস্থাপিত হবে। এটি ব্যাংকিং খাত, কর ব্যবস্থাপনা, সরকারি ব্যয় ও সামাজিক সেবা খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে সহায়ক হবে।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বিশ্বব্যাংক কাজ করে আসছে। এখন পর্যন্ত সংস্থাটি বাংলাদেশকে প্রায় ৪ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের অনুদান ও স্বল্প সুদের ঋণ দিয়েছে। আইডিএ ঋণপ্রাপ্ত দেশের তালিকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ রয়েছে শীর্ষ অবস্থানে।