যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক আলোচনা থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিল ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশ: ১৪ জুন, ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক আলোচনা থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিল ইরান

ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনাগুলোতে সর্ববৃহৎ হামলা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনাকে ‘অর্থহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছে তেহরান। দেশটির অভিযোগ, ওয়াশিংটনের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছাড়া এই হামলা সম্ভব ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে আগামী রোববার (১৫ জুন) ওমানে অনুষ্ঠেয় পারমাণবিক আলোচনার ষষ্ঠ দফা অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

শনিবার (১৪ জুন) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই হুম বলেন, “অন্য পক্ষ এমনভাবে কাজ করেছে যা সংলাপকে অর্থহীন করে তুলেছে। আপনি আলোচনার দাবি করতে পারেন না এবং একই সঙ্গে ইসরায়েলকে ইরানি ভূখণ্ডে হামলার অনুমতি দিতে পারেন না।”

তিনি আরও বলেন, “রোববারের আলোচনার বিষয়ে আমরা কী সিদ্ধান্ত নেব, তা এখনও পরিষ্কার নয়।” ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ও আধা-সরকারি মাধ্যমগুলো বাঘাইয়ের বক্তব্যের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তেহরান দাবি করেছে, ইসরায়েলের এই আগ্রাসন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ নির্দেশেই চালানো হয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের চলমান কূটনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করা। বাঘাই বলেন, “ওয়াশিংটনের সমর্থন ছাড়া এই হামলা সম্ভব হতো না।”

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের হামলায় নিজেদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তারা বলেছে, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখাই হবে ‘বুদ্ধিমান’ পদক্ষেপ।

ইসরায়েল তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে। এ হামলায় ইরানের বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র এবং রেভল্যুশনারি গার্ডের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন শীর্ষ বিজ্ঞানী ও সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন।

এই হামলার পাল্টা জবাবে ইরান শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায়। ইরানি প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত অন্তত তিনজন নিহত এবং আশি জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। ফলে পুরো ইসরায়েলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, লাখ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যায়।

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল-ইরান এই পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা টিকিয়ে রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে উভয় পক্ষের পারস্পরিক আস্থাহীনতা এবং যুদ্ধাবস্থার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে।