সংবাদপত্র এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তির কবলে: অভিযোগ তারেক রহমানের

এফএনএস অনলাইন | প্রকাশ: ১৬ জুন, ২০২৫, ১১:৩৫ এএম
সংবাদপত্র এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তির কবলে: অভিযোগ তারেক রহমানের
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একটি বিতর্কিত ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বারবার উঠে এসেছে। বিশেষত, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুনের ‘সংবাদপত্রের কালো দিবস’কে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে আসছে। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি তাঁর অবস্থান তুলে ধরেছেন।

রোববার (১৫ জুন) মধ্য রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে তারেক রহমান বলেন, “সংবাদপত্র এখনো পুরোপুরি ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে মুক্ত হয়নি।” তিনি দাবি করেন, বিগত ৫ আগস্ট যাঁরা ফ্যাসিবাদী সরকার বলে আখ্যা পেয়েছে, তাদের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা স্বাধীনতা পেলেও পুরোপুরি মুক্ত হয়নি। তারেক রহমানের মতে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান, যা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বও নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

তারেক রহমান তাঁর পোস্টে ১৯৭৫ সালের ১৬ জুনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ওই দিন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই সময় কেবলমাত্র চারটি অনুগত সংবাদপত্র রেখে দেশের বাকস্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে তারেক রহমান মন্তব্য করেন। এর ফলে বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক চাকরি হারান এবং পরিবার-পরিজনের জীবিকায় আঘাত আসে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল ভূগোলিক স্বাধীনতার পাশাপাশি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। যেখানে নাগরিক স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত থাকার কথা ছিল। অথচ স্বাধীনতাত্তোর সরকার এই চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তাঁর কন্যা শেখ হাসিনাও একদলীয় শাসন কায়েমের পথেই হেঁটেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার আমলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কালাকানুন প্রণয়ন, ভয়-ভীতি দেখানো এবং গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইনগুলিকে তিনি ‘ড্রাকোনিয়ান’ উল্লেখ করে বলেন, এই আইনের মাধ্যমে সংবাদপত্র ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে ভয়াল দুর্গে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। এতে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষকে সার্বক্ষণিক আতঙ্কে থাকতে হয়েছে।

তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র টিকবে না। তার ভাষায়, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।”

এছাড়া তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বাকশাল সরকারের অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছিলেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে