গুমবিরোধী আইন আসছে এক মাসের মধ্যে, থাকবে শক্তিশালী কমিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৬ জুন, ২০২৫, ০২:১৩ পিএম
গুমবিরোধী আইন আসছে এক মাসের মধ্যে, থাকবে শক্তিশালী কমিশন
ফাইল ছবি

বাংলাদেশে গুমবিরোধী আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই আইনের আওতায় একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন কমিশন গঠনের পরিকল্পনার কথাও জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এসব তথ্য জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ওয়ার্কিং গ্রুপের ভাইস চেয়ার গ্রাজিনা বারানোস্কা ও প্রতিনিধি আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ অংশ নেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইন উপদেষ্টা জানান, সরকার ইতোমধ্যে গুমবিষয়ক একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং আগামী এক মাসের মধ্যে অধ্যাদেশ আকারে এটি কার্যকর করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

আইন উপদেষ্টা জানান, আইনটির অধীনে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের ইচ্ছা রয়েছে সরকারের, যা গুমসংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, তদন্ত এবং নিরপেক্ষভাবে অনুসন্ধান পরিচালনায় সক্ষম হবে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল। তারা ইতোমধ্যে সরকারের গঠিত গুমবিষয়ক কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় যা রয়েছে:

১. গুমবিষয়ক আইনের খসড়া তৈরির সময় ভুক্তভোগী পরিবার ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময়।

২. গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য ‘মিসিং পার্সন সার্টিফিকেট’ চালুর উদ্যোগ, যাতে পরিবারগুলো উত্তরাধিকার, ব্যাংক হিসাবসহ আইনি অধিকার নিশ্চিত করতে পারে।

৩. যেসব নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি, তাদের খুঁজে বের করতে ‘কমিশন অন সার্চ’ গঠনের পরামর্শ।

৪. গঠিত কমিশনের অধীনেই অনুসন্ধান, রিপোর্ট ও সম্ভাব্য বিচারিক পদক্ষেপের রূপরেখা তৈরি।

এছাড়া, ড. আসিফ নজরুল জানান, ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ গঠনের ধারণাও সরকার বিবেচনা করছে। এ লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সে দেশে সফর করেছে। এখন আঞ্চলিক পরামর্শের (কনসালটেশন) মাধ্যমে দক্ষিণ এশীয় দেশসমূহের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মতামত নেওয়ার উদ্যোগ রয়েছে।

এদিন একই অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, সাম্প্রতিক ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ নিয়ে গঠিত পর্যালোচনা কমিটির কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, "অবশ্যই কিছু কিছু জায়গায় এই অধ্যাদেশটি পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। সরকার কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে আইনটি প্রণয়ন করেনি।"

কমিটি খুব শিগগিরই উপদেষ্টা পরিষদে একটি সুপারিশনামা উপস্থাপন করবে বলে জানান তিনি।

তিনি সরকারি কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “কমিটির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরুন, এবং যেন সরকারি কাজে বিঘ্ন না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।”

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে