দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফিরে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী এবং চিকিৎসক জোবাইদা রহমান। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে তার রাজনৈতিক সক্রিয়তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর নিশ্চিত করেন, “বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে ভোটার হওয়ার অধিকার যেকোনো নাগরিকের রয়েছে। সেই অধিকার প্রয়োগ করেই জোবাইদা রহমান নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।”
২০০৮ সালের এক-এগারো পরবর্তী সময়ে প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হলে জোবাইদা ও তারেক রহমান তখন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং দীর্ঘ সময় দেশে ফেরেননি। ফলে সে সময় তাঁরা ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি।
গত ৬ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জোবাইদা রহমানও। এরপর ঢাকায় অবস্থানকালে নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঈদুল আজহার আগেই তার ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেন ইসির কর্মকর্তারা। নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তথ্য অনুযায়ী, তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হলেও চূড়ান্তভাবে ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত হবে হালনাগাদ কার্যক্রমের শেষ ধাপে। আইন অনুযায়ী, আগামী বছরের ২ জানুয়ারি খসড়া এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। তবে নির্বাচন আগাম হলে আইন সংশোধন করে তার আগেই তালিকা চূড়ান্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
পেশায় চিকিৎসক জোবাইদা রহমানের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়। যদিও তিনি সরাসরি রাজনীতিতে সক্রিয় নন, তবু ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির খবরে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে—তিনি কি আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন?
সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে তার আগমন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ লক্ষ করা গেছে। তাঁকে স্বাগত জানিয়ে শহরে আনন্দমিছিল ও বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারিং করা হয়। বেনামি পোস্টারে তাঁকে ‘মর্যাদাপূর্ণ’ সিলেট-১ আসনের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাওয়া হয়।
আইন অনুযায়ী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে ব্যক্তিকে অবশ্যই ভোটার হতে হবে। আর ভোটার তালিকায় নাম থাকলে দেশের যেকোনো আসন থেকে তিনি প্রার্থী হতে পারেন। ফলে জোবাইদা রহমানের ভোটার হওয়া রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।