মহাদেবপুরে অবশেষে চাঁদাবাজীর টাকা ফেরৎ দিল কথিত সাংবাদিকরা

এফএনএস (রওশন জাহান; মহাদেবপুর, নওগাঁ) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:১৯ এএম
মহাদেবপুরে অবশেষে চাঁদাবাজীর টাকা ফেরৎ দিল কথিত সাংবাদিকরা

নওগাঁর মহাদেবপুরে অবশেষে চাঁদাবাজী করে নেয়া পাঁচ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছে কথিত সাংবাদিকরা। এরা হলো, দৈনিক যুগান্তরের মহাদেবপুর প্রতিনিধি ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ আইনুল হোসেন, এশিয়ান টিভির মহাদেবপুর প্রতিনিধি মোখলেছুর রহমান ও দৈনিক আমার সংবাদের মহাদেবপুর প্রতিনিধি বরুণ মজুমদার। এনিয়ে এলাকায় সাংবাদিক মহলে দারুণ তোলপাড় শুরু হয়েছে। মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষিকা অনুপস্থিত থাকায় তাদেরকে ভয় দেখিয়ে এই চাঁদাবাজী করা হয়েছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সাংবাদিক আইনুল হোসেন ও মোখলেছুর রহমান সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের চকউজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। তারা সেখানে দেখতে পান যে, দুই সহকারি শিক্ষিকা সেলিনা বানু ও জাকিয়া সুলতানা গত মহান বিজয় দিবসে স্কুলের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত। তারা প্রায়ই স্কুলে দেরি করে আসেন এবং ঢাকা ও রাজশাহীতে অবস্থান করেন বলে তারা অভিযোগ করেন। এছাড়া ওইদিন জাতীয় পতাকা স্কুলের শহীদ মিনারের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এতে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। ওই দুই সাংবাদিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুকুল চন্দ্র মন্ডলের বক্তব্য নিয়ে মহাদেবপুর ফিরে আসেন। এরপর দফায় দফায় তারা ওই দুই শিক্ষিকা ও প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়ে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। অন্যথায় এব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ করা হবে এবং সংবাদ প্রকাশ হলে স্কুলের সব শিক্ষকের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে বলে হুমকি দেয়া হয়। ওই সাংবাদিকদের ডাকে দুপুরে প্রধান শিক্ষক মহাদেবপুর হাসপাতালের সামনে আসেন। সেখানে সাংবাদিক আইনুল হোসেন, মোখলেছুর রহমান, বরুণ মজুমদার ও আরো একজন প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেন। বাকী টাকা পরদিন সকালের মধ্যে দিতে বলে, অন্যথায় খবর ছাপা হবে বলে হুমকি দেয়। 

সন্ধ্যায় ওই দুই শিক্ষিকার আত্মীয়দের নিয়ে প্রধান শিক্ষক মহাদেবপুর থানায় গিয়ে ওই চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি থাকায় ওই দুই শিক্ষিকার নতুন করে ছুটি নেয়ার দরকার হয়নি। কিন্তু এই বিষয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের হুমকি দিয়ে মোটা অংকের চাাঁদা চাওয়া হয়। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাশমত আলী অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। পরে তিনি মহাদেবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আজাদুল ইসলামকে বিষয়টি জানালে তার নেতৃত্বে বিষয়টি সুরাহা করা হয়। আইনুল হোসেন ও মোখলেছুর রহমান ও অপর সাংবাদিক মহাদেবপুর প্রেসক্লাবের কর্মকর্তা ছিলেন। মোবাইলফোনে আজাদুল ইসলাম জানান, ওই প্রধান শিক্ষকের আর কোন অভিযোগ নেই। থানায় যাওয়া ওই দুই শিক্ষিকার আত্মীয়রা জানান, সাংবাদিকেরা পাঁচ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ওই প্রধান শিক্ষক এখন দারুণ আতঙ্কে রয়েছেন। তিনি মোবাইলফোন বন্ধ রেখে লুকিয়ে থাকছেন বলে তার আত্মীয়রা জানিয়েছেন। কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে এখন তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে