আ. লীগ থেকে বিএনপিতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ

এফএনএস (মোবারক হোসেন শিশির; দুর্গাপুর, রাজশাহী) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০২:২৩ এএম
আ. লীগ থেকে বিএনপিতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ

 রাএফএনএস (মোবারক হোসেন শিশির; দুর্গাপুর, রাজশাহী) : রাজশাহী-৫ পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি আব্দুস সাত্তারের টাঙ্গানো ফেস্টুন খুলে ফেললেন দলীয় কর্মী সমর্থকরা। আব্দুস সাত্তারের বাড়ী দুর্গাপুর উপজেলার আন্দুয়া গ্রামে কিন্তু তিনি ব্যবসার কাজে ঢাকায় থাকেন। স্থানীয় নেতারা বলছেন তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারী। এ নিয়ে সংসদীয় আসন জুড়ে বিএনপি নেতাকর্মী সহ-সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের নির্বাচনী মাঠে প্রকাশ্যে আসেন বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব আব্দুস সাত্তার। ইতিমধ্যে তিনি উপজেলার সিনিয়র কিছু নেতৃবৃন্দদের সাথে দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।  এরমধ্যেই ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে আন্তরিকতার সাথে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণের বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।  এরপরেই পুঠিয়া দুর্গাপুর পুরো নির্বাচনী এলাকায় জুড়ে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি আব্দুস সাত্তার কে নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ও নানান গুঞ্জন।  নেতাকর্মীদের  আলোচনা সমালোচনা গুঞ্জনকে এড়িয়ে সম্পতি শিল্পপতি আব্দুস সাত্তার নিজেকে রাজধানীর বাড্ডা থানা ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ২১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা ও রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য পরিচয়ে পুরো নির্বাচনী এলাকা জুড়ে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে দেন।  দুর্গাপুর পুঠিয়ার বিএনপির সিনিয়র বিষয়টি ভালোভাবে মেনে নিতে না পেরে মনোনয়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি আব্দুস ছাত্রীর দলীয় পদের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যোগাযোগ করলে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল।  গত ১৫ ডিসেম্বর জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বাড্ডা থানা ও ঢাকা মহানগর উত্তর কার্যালয়ের দলীয় প্যাডে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বাবু কর্তৃক স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ্য " রাজধানীর বাড্ডা থানা ও ঢাকা মহানগর উত্তর ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রধান উপদেষ্টার পরিচয়ে রাজশাহী-৫ পুঠিয়া- দূর্গাপুর আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রচারকারী শিল্পপতি  মোঃ আব্দুস সাত্তার একজন মুখোশধারী আওয়ামীলীগ নেতা। এই নেতার অসৎ উদ্দেশ্যের প্রচারণায় দলীয় নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্যেও পত্রে জানানো হয়।  শিল্পপতি মোঃ আব্দুস সাত্তার দলীয় মিথ্যা পরিচয়ের বিষয়টি পত্র মারফত নিশ্চিত হওয়ার পরে সেই দিনেই গত ১৫ ডিসেম্বর নির্বাচনী এলাকায় টাঙ্গানোর সকল ব্যানার ফেস্টুন টেনে হিঁচড়ে খুলে ফেলে বিক্ষুব্ধ দলীয় কর্মী সমর্থকরা।  দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য জার্জিস হোসেন সোহেল বলেন, তিনি কোনদিন বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন কিনা আমার জানা নেই, তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাংসদ সদস্য সহ আওয়ামী লীগের  নেতাকর্মীদের সাথে তার ছবি ভাইরাল হয়েছে।  তিনি আরো বলেন, দুর্গাপুরের বিএনপির সিনিয়র কিছু নেতৃবৃন্দ অসৎ উদ্দেশ্যে মুখোশধারী আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সাত্তারকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।  ইতিমধ্যে বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আব্দুস সাত্তারকে পুঠিয়া- দুর্গাপুরে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্যের সাথে তোলা ছবি পোস্ট করা হয়েছে।   এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক জোবায়েদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার জীবন তো সেই শুনিনি যে আব্দুস সাত্তার নামে দুর্গাপুরের কোন বিএনপির নেতা রয়েছে। গত ৫ই আগস্ট এর পরে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান আয়নাল এর মাধ্যমে হঠাৎ তার রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটেছে, দুর্গাপুরের ত্যাগী বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা  বিএনপিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারীকে নেতা হিসেবে মেনে নেবেনা।  দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান আয়নাল এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আঃ সাত্তার সাহেব আওয়ামী লীগ করেন বা আওয়ামী লীগের কোন প্রোগ্রামে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন বলে কেউ প্রমাণ দিতে পারবে বলে আমার মনে হয় না, তাহলে তিনি কি বিএনপির রাজনীতি করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমাকে না বলে এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে ভালো জানা যাবে।  দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ রেজাউল করিম বলেন, আঃ সাত্তার সাহেব আওয়ামী লীগ না বিএনপি করে এ বিষয়টি ওই এলাকার লোকেরা ভালো জানে, তবে আমি ওই বিএনপির সভাপতি ইন্তাজ আলী সঙ্গে কথা বলেছি তিনি বলেছেন আঃ সাত্তার সাহেব সব সময় আওয়ামী লীগের বিপক্ষে রাজনীতি করতেন, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে তোলা ছবিগুলোর বিষয়ে আমার জানানেই। জেলা বিএনপির সদস্য ও দুর্গাপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইদুর রহমান মন্টু বলেন, কেন্দ্রীয় পত্র মারপত আমি যতটুকু জেনেছি অত্র ওয়ার্ডে উপদেষ্টা মন্ডলীর কোন কমিটি নেই। কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক প্রেরিত পত্র অনুযায়ী রাজনীতি চলবে। এ বিষয়ে আলহাজ্ব আঃ সাত্তার বলেন, আমি কোন দিন আওয়ামীলীগের রাজনীতি করিনি, আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজধানীতে বিএনপির রাজনীতি করে এসেছি। রাজধানীর বাড্ডা থানা ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ২১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা পরিচয় মিথ্যা মর্মে ঢাকা উত্তরের ২১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কর্তৃক পত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, পত্রে উল্লেখিত বিষয়বস্তু গুলো সম্পূর্ন মিথ্যা। পত্রের জবাবের জন্য আমিও চিঠি প্রস্তুত করছি। অচিরেই এর সত্যতা জানতে পারবেন জানান। তবে আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য সহ নেতাকর্মীদের সাথে তোলা ছবি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে