বরিশালে মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টি, তাই প্রথমে মহাসড়কের ওপর পলিথিন টাঙিয়ে ও পরে বৃষ্টিতে ভিজে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৯ জুলাই) সকাল দশটা থেকে বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের সদর উপজেলার সাহেবেরহাট এলাকায় ক্যাম্পাস সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে যানবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় মহাসড়কের দুইপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছিলো।

অবশেষে ‎টানা চার ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধের পর পুলিশের মৃদু লাঠিচার্জে দুপুর দুইটার দিকে মহাসড়ক ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীদের দাবি যৌথ বাহিনীর লাঠিচার্জে কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। গুরুত্বর আহতদের বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সাথে তারা বসার চেষ্টা করছেন। তাদের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।

সূত্রমতে, ‎ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে বিআইটি মডেলের মতো স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের এক দফা দাবিতে বুধবার সকাল দশটা থেকে বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা সড়কের ওপর গাছের গুড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এতে করে মহাসড়কের দুইপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে চরম ভোগান্তিতে পরে যাত্রীরা।

বিক্ষুব্ধ ‎শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ দুই মাস ধরে ঢাবির অধিভুক্তি বাতিল করে বিআইটির মতো স্বাধীন কমিশন গঠন করার জন্য তারা দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে কোন কর্ণপাত করেনি। যেকারণে বাধ্যহয়ে তারা দাবি আদায়ের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক শার্টডাউন করে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল থেকে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করা হয়। কিন্তু তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এতে তাদের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।

অপরদিকে ‎শিক্ষার্থীদের অবরোধের খবরে বন্দর থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের একদফা দাবি আদায়ে সড়ক না ছাড়ার হুশিয়ারি দেয়। পরে একপর্যায়ে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে। পরে সড়ক ছেড়ে ক্যাম্পাসের গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ লিটন রাব্বানী জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা যে এক দফা দাবি তুলেছে, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। 

পুলিশের দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। তবে বরিশাল সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা দফায় দফায় বৈঠক করেছি। তাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এ বিষয়টির সমাধান হবে।