খুলনার পাইকগাছায় সরকারি খাস খালের ৩৬.৪৫ একর জলাকার শ্রেণির জমি চাষাবাদের বিলান দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে খরিদের পর নিজেরাই বাদী-বিবাদী সৃষ্টি করে মামলায় আদালতের রায় ডিক্রী নিয়ে ১৬টি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম খালের দু’মাথায় বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেয়। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বাঁধ কেটে দখলদারদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এ সংক্রান্তে এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে খবর পেয়ে সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক বাদী হয়ে প্রতারক দখলদারদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা করেছে। দখলদার প্রতারক নির্মল চন্দ্র ও মনোহর মন্ডল উপজেলার রামচন্দ্রনগর গ্রামের নাবা গ্রামের মৃত অতুল কৃষ্ণ মন্ডলের ছেলে। ইতোমধ্যে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে খুলনা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এদিকে খালের ৩৬.৪৫ একর জমি চাষাবাদের উপযোগী বিলান শ্রেণি দেখিয়ে খরিদার পর আদালতের রায় ডিক্রী ও সর্বশেষ খালের দু’মাথায় বাঁধ দেওয়ায় ঐ অঞ্চলের অন্তত ১৬টি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় স্থানীয়রা তাদের দেওয়া বাঁধ কর্তনপূর্বক তাদের দখল উচ্ছেদ করেছে। ভূক্তভোগী স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কামারাবাদ ও ভৈরবঘাটা মৌজার অন্তত ১৬টি গ্রামসহ বিস্তির্ণ অঞ্চলের পানি সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম এ খালটি। যা চাষাবাদের উপযোগী বিলান জমি দেখিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে বিভিন্ন তঞ্চকতাপূর্ণ কাগজপত্র সৃষ্টি করে সরকারকে পক্ষ না করে নিজেরা বাদী বিবাদী অন্তভূক্ত হয়ে ১৯৮৬ সালে সংশ্লিষ্ট দেঃ আদালতে একটি মামলা করেন। ১৯৯০ সালে ঐ মামলায় রায়-ডিক্রী প্রাপ্ত হয়ে খালটির দখল নিতে নানা প্রপাগন্ডা ও খালের দু’মাথায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে। স্থানীয়রা জানান, সর্বশেষ জরিপে সরকারের নামে রেকর্ড সম্পন্ন হলেও মামলায় সরকারকে পক্ষ করা হয়নি। অন্যদিকে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পানি নিষ্কাষণের মুখে স্লুইচ গেট থাকলেও অতি গোপণে তা চাপা রাখা হয়েছে। খালের জলাকারের পরিমাণ ৩৬.৪৫ একর। বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ১৬টি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পাশাপাশি বহু মানুষ দীর্ঘ দিন যাবৎ মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। খাসখালটি সরকারিভাবে উন্মুক্ত ঘোষণার দাবিতে এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়েনর কাজিমুছা গ্রামের মৃত এরফান আলী খা এর ছেলে মোঃ আশরাফ আলী খা বাদী হয়ে এলাকার ৬৭০ জন ভূক্তভোগীসহ ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সকল ইউপি সদস্যসহ স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র খুলনা জেলা প্রশাসক দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, খালটি দখলদারদের কব্জায় থাকলে এলাকাবাসীর সাথে যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। কোনো প্রকার ব্যাত্যয় ঘটলে স্থানীয়দের আইন হাতে তুলে নিতে পারেন বলেও আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইফতেখারুল ইসলাম শামীম জানান, ইতোমধ্যে উপজেলার কপিলমুনির বহুলালোচিত নাছিরপুর খাস খালটি উন্মক্ত করা হয়েছে। তদন্তপূর্ব এ খালের বিষয়টি নিয়ে যথাযথ ব্যাবস্থ গ্রহণ করা হবে।