খুলনায় পারিবারিক কলহের কারণে চিত্র নায়িকা পপির চাচা মিয়া বাবর হোসেনকে নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ জমিদার বাড়ী ‘মিয়াবাগ’ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এ অবস্থায় জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাকে অন্যের বাড়ীতে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মিয়া বাবর হোসেন এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার বাবা জমিদার মৃত ইসমাঈল মিয়ার ৬ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে আমি ৪র্থ। অন্যান্য শরীকদের মতো আমিও মিয়াবাগের একজন শরীক। আমি নিঃসন্তান থাকায় বিভিন্ন সময় ঢাকায় থাকি। এই সুযোগে আমার ভাইয়ের স্ত্রী শিউলি বেগম (চিত্র নায়িকা পপির মা) ও তার মেয়ে জামাই ট্রাস্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা তারেক আহমেদ চৌধুরী আমার মায়ের রুম, ড্রইং রুম, গেষ্ট রুমসহ বিভিন্ন রুম দখল করে আছে। এ অবস্থায় আমি গত ৪ জুলাই বেলা ১১টায় বাড়ীতে এসে দেখি আমার ভাইয়ের স্ত্রী শিউলি বেগমের রুম বাদে অন্য সকল রুম তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। এ দৃশ্য দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। শিউলি বেগমকে তখন বলি আমি রাতে কোথায় থাকবো। সে তখন আমাকে বলে আপনি দ্বিতীয় তলায় থাকেন। এঘটনার পরের দিন ৫ জুলাই সকাল ৮টার দিকে শিউলি বেগম এবং তার মেয়ে জামাই তারেক আহমেদ চৌধুরী আমাকে আধা ঘন্টা সময়ের মধ্যে বাসা থেকে নেমে যেতে বলে হুমকি দেয়। ওই সময় বাসা হতে নামতে দেরি হওয়ায় তারা আমার কাছে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলে এবং আমাকে মারধোর করতে উদ্যত হয়। মানসম্মানের ভয়ে আমি অসহায় হয়ে বাসা থেকে নেমে নীচে এসে বসি। এরপর তারা আরো অজ্ঞাতনামা লোকজন ডেকে এনে আমার ঘাড় ধরে বাসা থেকে রাস্তায় বের করে দেয়। পরবর্তীতে আমি আমার পরিচিত মান্নান এর বাসায় আশ্রয় নেই। এরপর আমি আমার নিকটতম লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেই।
মিয়া বাবর হোসেন আরো বলেন, জমিদার বাড়ীর সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ার ভয়ে আমি এতোদিন নিশ্চুপ ছিলাম। পারিবারিক বিষয়গুলো ঘরের বাইরে আনতে চাইনি। কিন্তু জামাই নামধারী ট্রাস্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা তারেক আহমেদ চৌধুরীর অসৌজন্যমূলক আচরণ, প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি-ধামকি দিয়ে পরিবেশ অস্বাভাবিক করে তুলেছে। তারেক আমাদের বাড়ীতে লজিং মাষ্টার থেকে লেখাপড়া করেছে। ভাইজীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করার পর এখন জোরপূর্বক পুরো বাড়ী দখল করে আছে। ট্রাস্ট ব্যাংকে চাকুরী করার সুবাধে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়।
এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে তারেক আহমেদ চৌধুরীকে ফোন দেওয়া হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি দীর্ঘদিন খুলনায় যাই না। আমাকে কেন জড়ানো হলো বুঝতে পারছি না। মিয়া বাবর হোসেন ৭০ বছর আগে তার সম্পত্তি বিক্রি করে চলে গেছেন। তার আপন মামীকে ভাগিয়ে বিয়ে করার কারণে তার সাথে পরিবারের যোগাযোগ ছিলনা। এছাড়া জমিদার বাড়ীর যে অংশটুকু তার ছিল সেটি তারই আপন ছোট ভাই চিত্র নায়িকা পপির বাবা আমির হোসেন টুলুর কাছে বিক্রি করেছেন। টুলু জীবিত থাকাকালে বিক্রিত ওই অংশটুকু তার মেয়ে খেয়ালীকে লিখে দেন।
তিনি আরো বলেন, মিয়া বাবর হোসেন তার ফুফুর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট করেছেন। হাবিব নামের এক যুবক মিয়া বাড়ীর সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এবং সম্পত্তি দখল করার জন্য কলকাঠি নাড়ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পাল্টা এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে মিয়া বাবর হোসেন বলেন, তার বয়স এখন ৭৩ বছর। ৭০ বছর আগে তিনি ছিলেন তিন বছরের নাবালক। তখন সম্পত্তি প্রাপ্তি এবং বিক্রি করার প্রশ্নই আসে না। তারেক আহমেদ চৌধুরী মিথ্যা কথা বলেছেন বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।