মুলাদীতে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের চরমালিয়া ও ভেদুরিয়া গ্রামের মাঝখান দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটায় বড় খালের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছেন ওই দুই গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার। ফসলি জমি থেকে মাটি কাটায় আশপাশের ফসলি জমিও হুমকির মুখে পড়েছে। দুই ও তিন ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়ায় ওই গ্রামে আমন, বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। চরমালিয়া গ্রামের মৃত রশিদ সিকদারের ছেলে কামাল সিকদারের নেতৃত্বে ৭/৮জন ব্যবসায়ী ফসলি জমির মাটি কেটে লুট করছেন বলে অভিযোগ করেন জমির মালিকেরা। তারা দ্রুত মাটি কাটা বন্ধ করে ফসলি জমি রক্ষার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদন করার পর ব্যবসায়ীরা রাতের আধারে কোপা ড্রেজার বসিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি লুট করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সফিপুর ইউনিয়নের চরমালিয়া বিলের বেশির ভাগ জমিতে আমন, বোরো ধানসহ দুই-তিনটি ফসল হয়। কিছু দিন আগে কাঞ্চন সিকদার ও কামাল সিকদারের নেতৃত্বে এলাকার কয়েকজন লোক নিজেদের বিএনপির কর্মী পরিচয় দিয়ে ‘কোপা ড্রেজার’ ব্যবসা শুরু করেন। তাঁরা ওই ড্রেজার দিয়ে জোরপূর্বক ফসলি জমির মাটি নিয়ে ডোবা ও নিচু জমি ভরাটের ব্যবসা করছেন। এসব ব্যবসায়ী ডোবা ভরাটের জন্য টাকা নিলেও জমির মালিকদের কোনো টাকা-পয়সা দেন না। জমি থেকে মাটি নেওয়ায় বাধা দিলে জমির মালিকদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারী চরমালিয়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু আকন জানান, জমির মালিকদের না জানিয়ে ডোবা, পুকুর, নিচু এলাকা ভরাটের জন্য ফসলি জমি থেকে মাটি নেওয়ায় পুকুর তৈরি হয়েছে। এতে পার্শ্ববর্তী জমি ভেঙে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা তাঁদের লাভের আশায় ফসলি জমির মাটি লুট বন্ধ করছেন না। এভাবে মাটি নেওয়া হলে পুরো বিলের প্রায় ২০ একর জমিতে চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়বে।
আরেকজন জমির মালিক মো. মঞ্জু মোল্লা বলেন, ফসলি জমি থেকে মাটি তুলতে নিষেধ করার পরেও কাঞ্চন সিকদার ও তাঁর লোকজন শুনছেন না। তাঁরা সবাই বিএনপির কর্মী, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোর করে মাটি নিচ্ছেন। এতে সাধারণ কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই মাটি কাটা বন্ধের দাবিতে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনের পর ওই ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে রাতের আধারে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছেন।
সফিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) মো. হান্নান চৌকিদার বলেন, আগে ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য সেলিম মল্লিক ড্রেজারটি চালাতেন। কয়েক মাস আগে বিএনপির কর্মী কাঞ্চন সিকদার ড্রেজারটি কিনে এলাকায় ব্যবসা করছেন।
ইউএনও মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ফসলি জমি নষ্ট করে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার বৈধতা নেই। দুজন জমিমালিকের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব জমি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।