বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী শুক্রবার সকালে নায়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের রোগ মুক্তি কামনায় দুস্থদের মাঝে জায়নামাজ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বললেন, “এটা শুধু মুখের কথা নয়, সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কিনা এটা এখন মানুষের মনে মনে। দুর্ভিক্ষের আলামত যদি আমরা দেখতে পাই শুনতে পাই তাহলে তো জনগণ আমাদের ছেড়ে দেবে না।”
রুহুল কবির রিজভী আরও যোগ করে বলেন, “আমরা বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করছি। আমরা মানবিক সাম্য, ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করছি। আমরা আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি যার জন্য দরকার চিরায়ত গণতন্ত্র প্রকৃত গণতন্ত্র খাটি গণতন্ত্র। এটা বৃহত্তর আদর্শের লড়াই যেখানে জনগণের মালিকানা জনগণ ফিরে পাবে। সেই মালিকানা আটকে রাখা তো বড় ধরনের ফ্যাসিবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া।”
“জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে প্রতিটি পদে পদে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় সেই জবাবদিহিতা এখন নেই। অন্তর্বর্তী সরকারকেও আমরা মনে করি জনসমর্থিত কারণ, সমস্ত রাজনৈতিক দল শুধু আওয়ামী লীগ আর তাদের কয়েকটি দোসর ছাড়া সবাই এই সরকারকে সমর্থন করেছে। ড.মোহাম্মদ ইউনূস সাহেবকে আমরা সবাই সমর্থন করে যাচ্ছি। কিন্তু এটাও তো ঠিক দুর্ভিক্ষের আলামত যদি আমরা দেখতে পাই, শুনতে পাই তাহলে তো জনগণ আমাদের ছেড়ে দেবে না”-উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আজকে প্রায় অসংখ্য গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ কর্মহীন হচ্ছে। মানুষ যদি খাবার কিনতে না পারে তাহলে কিন্তু দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হবে এবং এই আলামত তৈরি হলে কেউই কিন্তু রেহাই পাবে না আর হাততালি দিবে ওই পতিত ফ্যাসিস্টরা।
রিজভী বলেন, যে দোসরা ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা মেরে বিদেশে পাচার করেছে তাদের সঙ্গে নামে মাত্র কিছু প্রতিষ্ঠান একই কাজ করেছে। সরকার ইচ্ছা করলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ করে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে পারে। গার্মেন্টসগুলো যাতে বন্ধ না হয় সরকার এটাকে নানাভাবে টেকওভার করতে পারে। দোসররা থেকে থাকলে তাদের বিচার করুন। শ্রমিকদের কলকারখানা যেন বন্ধ না হয় কারণ অর্থনীতির কঠিন করুণ অবস্থা। এটা শুধু মুখের কথা নয় সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কিনা এইটা এখন মানুষের মনে মনে।
রিজভী আরও বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে তো সংস্কারবিরোধী কোনও কথা বলা হয়নি। সংস্কারের পক্ষেই বলা হয়েছে। আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে প্রায় অনেক জিনিসই প্রতিফলিত হয়েছে। জুলাই সনদদের অনেক বিষয় বিএনপি গ্রহণ করেছে। কিন্তু এটি মূলনীতির মধ্যে নিতে হবে কেন? যুগে যুগে দেশে দেশে আরো সংস্কার হবে। সংস্কার কোনও থাই পর্বত মালার মতো স্থির কোনো বিষয় নয় সংস্কার একটি গতিশীল ব্যাপার। সমাজ এবং রাষ্ট্রে যখন যেটির প্রয়োজন হবে গণতন্ত্রের স্বার্থে রাষ্ট্রের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে তখনই সংস্কার করে সেই আইন প্রণয়ন হবে। এটাই তো গণতান্ত্রিক সংবিধানের নিয়ম কিন্তু এটাকে মূলনীতির মধ্যে নিতে হবে আগে সংস্কার এগুলো বলে তো বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে। এতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্ত তৈরি হচ্ছে। কেন আপনারা জনগণকে এভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন?