মাদারীপুরে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, বাড়ছে আতঙ্ক

এফএনএস (এস. এম. রাসেল; মাদারীপুর) : | প্রকাশ: ১৩ জুলাই, ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
মাদারীপুরে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, বাড়ছে আতঙ্ক

বর্ষা মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে মাদারীপুরে প্রতিদিনই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। এডিস মশা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে নতুন রোগী। শহর থেকে গ্রাম সবখানেই বাড়ছে আতঙ্ক। মোট আক্রান্তের অর্ধেকই রাজৈর উপজেলায়। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে জেলায় বাড়তে পারে এ রোগের ভয়াবহতা। প্রতিরোধে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এগিয়ে আসার আহ্বান স্বাস্থ্য বিভাগের। কথা হয়, চরকাকৈর গ্রামের ৭৩ বছর বয়সী সামাদ মাদবর ও তার ছেলে হারুনের সঙ্গে। তারা দুইজনেই জ্বর, কাঁপুনি, আর মাথা ব্যথা নিয়ে ছুটে আসেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরীক্ষা করানোর পর দু’জনেরই ধরা পড়ে ডেঙ্গু। তাদের মতো প্রতিদিনই ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে আসছেন রোগীরা।

সরজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বর্ষা মৌসুমে শহর থেকে গ্রাম সবখানেই বৃদ্ধি পেয়েছে এডিস মশা। বাসা-বাড়ির আঙিনায় জমে থাকা পানি, বদ্ধ ড্রেনেও খুব সহজে এডিসের হচ্ছে বংশবিস্তার। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীকে কামড় দেয়া মশা থেকে এই রোগ দ্রুত অন্যের শরীরে ছড়ায়। ফলে প্রতিনিয়তই জনমনে বাড়ছে আতঙ্ক। জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর ২০০ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও ছুটে যাচ্ছেন রোগীরা। জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তের ৫০ শতাংশই রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা। মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের সীমানাবর্তী উপজেলা হওয়ায় প্রতিনিয়তই বাড়ছে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প কিছু নেই বলে মনে করে স্বাস্থ্য বিভাগ। আর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানায় জেলার সিভিল সার্জন।

রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া রোগী শাহীন মাদবর বলেন, আমি টেকেরহাট এলাকায় দিনমজুরের কাজ করি। তিনদিন ধরে জ্বর না কমায় হাসপাতালে ছুটে এসেছি। পরীক্ষা করানোর পর ধরা পড়েছে ডেঙ্গু। ফলবিক্রেতা নুর ইসলাম বলেন, আমি ফলের ব্যবসা করি। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, কিছুতেই কমছে না। গ্রামের ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধও খেয়েছি। পরে বাধ্য হয়ে ছুটে আসি ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষার পরে ডেঙ্গু ধরা পড়লে এখন ভর্তি হাসপাতালে। 

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমল বলেন, জেলায় ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের অর্ধেকই রাজৈর উপজেলায়। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহও করা হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাসা-বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হতে হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে