বাংলাদেশের মফস্বল সাংবাদিকদের কাছে এক দীপ্ত প্রতীক হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)। সাংবাদিকদের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তার প্রশ্নে যে সংগঠনটি ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই যাত্রা শুরু করেছিল, আজ তা সফলতার সাথে ১৩ বছর পেরিয়ে ১৪ বছরে পদার্পণ করেছে।
এই উপলক্ষে বিএমএসএফ ঘোষিত মাসব্যাপী কর্মসূচি সারাদেশে ও প্রবাসে ব্যাপক উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে। “সাংবাদিক বাঁচলে গণমাধ্যম বাঁচবে; গণমাধ্যম বাঁচলে গণতন্ত্র রক্ষা পাবে”এই মূল বার্তা সামনে রেখে সংগঠনটি একটি কার্যকর, জনমুখী এবং পেশাদার সাংবাদিকতা গড়ে তোলার নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)'র বরিশালের গৌরনদী উপজেলা শাখার উদ্যোগে গুনীজন সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগের কৃতি সন্তান ফারিহা তানজিন আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার থেকে এডিসি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ায় তাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে বিএমএসএফ'র কেন্দ্রীয় যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক খোকন আহম্মেদ হীরা, গৌরনদী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ, আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ডা. মাহবুবুর রহমান, সাবেক সভাপতি সরদার হারুন রানা, কেএম আজাদ রহমান, সাংবাদিক ওমর আলী সানীসহ অন্যান্য সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
এক যুগের বেশি সময় ধরে চলা সংগ্রাম ও সাফল্য :
গ্রামীণ ও মফস্বলাঞ্চলের সাংবাদিকদের অবহেলা, হয়রানি ও নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বিএমএসএফ সাংবাদিকতার এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ২২ হাজার সদস্য নিয়ে এটি দেশের সর্ববৃহত সাংবাদিক সংগঠন। প্রবাসেও বিএমএসএফ'র রয়েছে ছয়টি শাখা। যা এ সংগঠনের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাকে দৃঢ় করেছে।
সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সমূহ :
আইনি সহায়তা > সংবাদ প্রকাশের কারণে হয়রানির শিকার সাংবাদিকদের বিনা খরচে সহায়তা।
প্রশিক্ষণ > রিপোর্টিং, লিডারশিপ, ডিজিটাল নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ।
চিকিৎসা সহায়তা > দুর্ঘটনাগ্রস্ত ও অসচ্ছল সাংবাদিকদের সহায়তায় এগিয়ে আসা।
জার্নালিস্ট শেল্টার হোম > ঢাকায় সাংবাদিকদের নিরাপদ আবাস ও খাবারের সু-ব্যবস্থা।
সংবর্ধনা প্রদান > সাহসিকতা ও নিরপেক্ষতার জন্য প্রতিবছর সাংবাদিক সম্মাননা।
সংগঠনের মুখপত্র > মিডিয়া ক্যানভাস প্রকাশ।
সহযোগী সংগঠন > ২০১৯ সাল থেকে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাংলাদেশ।
মাসব্যাপী ঘোষিত ১২ দফা কর্মসূচি:
১. নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তি ও সদস্যপদ নবায়ন।
২. ১৪ দফা দাবির পাঠ ও সংলাপ।
৩. জাতীয় ও স্থানীয় সাংবাদিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময়।
৪. বৃক্ষরোপণ ও পরিবেশ সচেতনতা কর্মসূচি।
৫. সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও নিরাপত্তা বিষয়ে সেমিনার।
৬. পেশাগত প্রশিক্ষণ এবং ওয়ার্কশপ।
৭. কমিটি গঠণ ও পুনর্গঠন।
৮. সাংবাদিক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ।
৯. সাংবাদিক সম্মাননা প্রদান।
১০. চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা কার্যক্রম।
১১. মিডিয়া ক্যানভাসের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ।
১২. ৩০ জুলাই ঢাকায় কেন্দ্রীয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান।
চেয়ারম্যানের শুভেচ্ছা বার্তা :
বিএমএসএফ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর দেশব্যাপী সকল গণমাধ্যম, সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন-বিএমএসএফ কেবল একটি সংগঠন নয়; এটি তৃণমূল সাংবাদিকদের আশা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক। সাংবাদিকদের পাশে থাকা, তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সোচ্চার হওয়া এবং একটি নিরাপদ গণমাধ্যম পরিবেশ গড়াই আমাদের অঙ্গীকার।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা ছাড়া গণতন্ত্র কখনোই পরিপূর্ণ হতে পারে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন-আগামী দিনে আমরা সাংবাদিকদের জন্য পেনশন সুবিধা, আবাসন প্রকল্প, চিকিৎসা তহবিল, সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণের ডিজিটাল রূপায়ন ইত্যাদির মাধ্যমে বিএমএসএফ'র অগ্রযাত্রা আরও সুসংহত ও স্থায়ী করতে চাই।
গণমাধ্যমের প্রতি আহবান:
সাংবাদিকদের বৃহৎ এই সংগঠনটির ১৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের প্রতিটি প্রিন্ট, অনলাইন, ইলেকট্রনিক ও স্যাটেলাইট মিডিয়ায় বিএমএসএফ'র কর্মসূচিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে প্রচারের জন্য বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিশেষ করে ১৫ জুলাই ও ৩০ জুলাইয়ের মূল অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রত্যাশিত।
সংগঠনের বৈধ কাঠামো ও নিবন্ধন :
নিবন্ধন নং: ০৬/২০২২ (আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়)।
কপিরাইট নং: ২৫৮৪৪/২০২২
সদস্যতা: এ্যাবজার (এ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অর্গানাইজেশন)।
সংবাদপত্র ও সাংবাদিক সংগঠন সমূহের প্রতি আহবান:
এই ঐতিহাসিক মুহুর্তটি সম্মিলিতভাবে উদযাপন এবং প্রচার করার মধ্যদিয়েই সাংবাদিকদের প্রকৃত মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র রক্ষার যাত্রা আরও বেগবান হবে বলে মনে করছেন বিএমএসএফ'র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর।