উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২২ জুলাই, ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব

ঢাকার উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা। এই দুর্ঘটনায় নিহত হন অন্তত ৩১ জন এবং আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১৬৫ জন। এ প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনে যান সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তবে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে, যখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে ফেলেন এবং তারা কলেজ প্রাঙ্গণেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

উপদেষ্টাদের পরিদর্শনের সময় শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেন। উপদেষ্টারা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ থামেনি। দুপুর পৌনে ১টার দিকে আলোচনার পর বের হতে চেষ্টা করেন উপদেষ্টারা, কিন্তু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বাধায় আবারও কলেজ ভবনে ফিরে যেতে হয়। বিকেল সোয়া ৩টার দিকেও পুলিশ পাহারায় বের হতে চেয়ে ব্যর্থ হন তারা। শিক্ষার্থীদের স্লোগান, বাধা এবং প্রতিবাদে আবারো কলেজের সাত নম্বর একাডেমিক ভবনে অবস্থান নেন উপদেষ্টারা।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. মহিদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপদেষ্টাদের গাড়িবহর মেট্রোরেলের ডিপো হয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ পাহারায় তারা নিরাপদে স্থান ত্যাগ করেন।

সোমবারের বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের বিষয়ে আইএসপিআর যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করেন, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাইলস্টোন কলেজ ও সংলগ্ন সড়কে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

সারাদিনব্যাপী চলা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা “ভুয়া ভুয়া” স্লোগান দিয়ে দাবি জানান, দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করতে হবে এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আইন উপদেষ্টা তাদের দাবিকে "যৌক্তিক" বলে উল্লেখ করেন এবং আশ্বাস দেন, সরকারের পক্ষ থেকে সব দাবি পূরণ করা হবে। এরপরও শিক্ষার্থীরা তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে।

এই ঘটনায় শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্রসমাজের সম্পর্ক, নিরাপত্তা ইস্যু ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ এবং প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে আরও জোরালো শিক্ষাঙ্গনভিত্তিক আন্দোলনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে