বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে বললেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সর্বদা দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থায়ী সরকার গঠনের পক্ষে। রাজনৈতিক সরকার না থাকলে দেশের সমস্যা বাড়তে থাকে।
দুর্ঘটনার পর সরকারের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সরকারের কোনো গাফিলতি ছিল না। তবে, অভিজ্ঞতার অভাব ছিল। তারা তো কখনো রাষ্ট্র পরিচালনা করেননি। সবাই অনভিজ্ঞ। এই আমরা যেমন রাষ্ট্র পরিচালনা করেছি, আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, সেই অভিজ্ঞতা তাদের নাই।’’
‘‘আরেকটা সমস্য হলো ইগো। তারা কোনো বিষয় আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন না। আমাদের কাছ থেকে কোনো পরামর্শ নেন না। এটা ইগোর কারণে হয়ে থাকতে পারে’’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাকে বড় করে না দেখে তাদের স্বদিচ্ছা ও প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাকবিতণ্ডা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, এগুলো রাজনীতির অংশ। প্রতিপক্ষকে কথায় ঘায়েল করার চেষ্টা থাকবেই। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতি থাকলেই দেশের উন্নতি হয়। গণতন্ত্রের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, গণতন্ত্রে সবাইকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। তবেই ভালো সমাধান আসবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গণতন্ত্রে অনেক ক্ষেত্রে শতফুল ফুটতে দিতে হবে। গণতন্ত্র মানেই সকলকে কথা বলতে দিতে হবে, শুনতে হবে। এটা হলেই শতফুল ফুটবে। তার মধ্যে থেকে ভালো সৌরভ-সুবাতাস বয়ে আসবে।”
এক ব্যক্তির দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীত্ব একসঙ্গে না রাখার প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি একটি প্রস্তাব মাত্র। আলোচনা চলছে। সব দলের মতামত নেওয়া হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
দলীয় প্রধান একইসঙ্গে সরকার প্রধান বা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না- এমন একটা প্রস্তাব জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দিয়েছে। এ প্রস্তাবের ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কী?- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘এটা তো তাদের প্রস্তাব। এ প্রস্তাবের পক্ষে, বিপক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো মত দিচ্ছে। সবার মতামতই শুনতে হবে। এটাই তো গণতন্ত্রের মূল কথা। ‘সব ফুল ফুটতে দাও’- এটাই তো গণতন্ত্র।’’
পিআর নিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো সরব হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান কী?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সবাই সবার কথা বলছে। আমরা আমাদের কথা বলছি। সবার কথাই শুনতে হবে। সবাইকে বলতে দিতে হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ।’’
বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সভাপতি মৃগেন হাগিদের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন এই বৈঠকে।