ভারতের রাজস্থানের ঝালাওয়ারের মনোহর থানায় এক সরকারি স্কুল ভবন ধসে অন্তত ৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় আরও ২ শিক্ষার্থী হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে শনিবার (২৫ জুলাই) সকালে, যখন স্কুল চলছিল এবং শ্রেণিকক্ষে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
দুর্ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পিপলোদি সরকারি বিদ্যালয়ে। ভবনটির ছাদ আচমকা ধসে পড়ে, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে ছুটে এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। এরপর চারটি জেসিবি মেশিন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিগত কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে ভবনটির ছাদ দুর্বল হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরেই ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের দাবি, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়টিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলতো।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘটনাটিকে “বেদনাদায়ক ও মর্মান্তিক” বলে মন্তব্য করেছেন। এক্স-এ দেওয়া বার্তায় তিনি বলেন, “এই কঠিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছে।”
রাজস্থানের শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলাওয়ার বলেন, “আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহতদের চিকিৎসা ও ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছি। একইসঙ্গে ভবন ধসের পেছনে কী কারণ রয়েছে, তা জানতে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
রাজ্য শিক্ষা সচিব কৃষ্ণ কুনাল জানিয়েছেন, সব শিশুর বয়স ছিল ৮ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। আহতদের মনোহর থানা হাসপাতাল ও ঝালাওয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত অব্যবস্থাপনা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।