দিঘলিয়ার এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

এফএনএস (সৈয়দ জাহিদুজ্জামান; দিঘলিয়া, খুলনা) : | প্রকাশ: ৩১ জুলাই, ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম
দিঘলিয়ার এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে  নবম শ্রেণীর ছাত্রীর ছবি তোলার অভিযোগ, বিদ্যালয়ের  শিক্ষিকার সাথে অনৈতিক মোবাইল মেসেজ অভিযোগ ও সহকারী শিক্ষকের পিছনে থাকা নানা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে তদন্ত কমিটির মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন শেষের দিকে। 

 এদিকে বিদ্যালয়টিতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে সেনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শ্রেণী কক্ষে নবম শ্রেণীর ছাত্রীর অনুমতি ছাড়া গোপনে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া মোবাইল ফোনে ছবি তোলেন । ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ছাত্র/ছাত্রী,  অভিভাবক একত্রিত হয়ে শিক্ষক কিবরিয়ার বিরুদ্ধে হট্টগোল শুরু করে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবস্থা প্রতিকূল দেখে উপজেলা প্রশাসন ও দিঘলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করেন। থানা পুলিশ কিবরিয়া মাষ্টারকে তাৎক্ষনিক উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেয়। সুস্থ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসে পরিস্থিতি তখন শান্ত হয়। শিক্ষক কিবরিয়াকে পুলিশ পাহারায় বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়। উপজেলা প্রশাসন দিঘলিয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বিপাশা দেবী তনুকে আহবায়ক, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসার শামসুন নাহার ও সেনহাটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষক (গনিত) কে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদেরকে ৭ কর্ম দিবসে অভিযোগের তদন্ত করে  সুনির্দিষ্ট মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দাখিল করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের পর অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা যায়। তবে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে সেটাই দেখার জন্য মানুষ অধির আগ্রহে প্রহর গুনছেন সকলমহল। পাশাপাশি নব জাতীয়করণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চাকুরি বদলীর কোনো সুযোগ নেই। তাহলে কি সাময়িক বরখাস্তের দিবসই কি শুধু বাড়ানো হবে?

অপর দিকে উক্ত অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার নিকট উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন তদন্ত কমিটির সদস্যদের টাকা দিয়ে আমার পক্ষে রিপোর্ট করাব। 

গোলাম কিবরিয়া সহকারি শিক্ষক হিসেবে ২০১২ সালে স্থানীয়ভাবে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তিমি নিয়োগ পেয়ে সেনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা শুরু করেন। এই পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ১৪ থেকে ১৬ টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শ্রেনী কক্ষে পাঠ্য বইয়ের বাইরে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক আলোচনা, শ্রেণিতে শ্রেণি পাঠ্য বিষয় বাদ দিয়ে স্বামী/স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে বক্তব্য রাখেন যা অনৈতিক।  ছাত্র/ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উক্ত শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া বিদ্যালয়ে যোগদান করলে তারা ক্লাস বর্জন করবে এমনটাই জানিয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কার ছত্রছায়ায় কোন পেশি শক্তির বলে বলিয়ান হয়ে কিবরিয়া মাষ্টার বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে? এটাও ক্ষতিয়ে দেখা দরকার বলে বিজ্ঞমহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, আজিজুল হাকিম নামের এক ব্যক্তি, খুলনা জেলা তরুণ দলের যুগ্ম আহ্বায়ক পরিচয় দিয়ে, অভিযুক্ত শিক্ষক কিবরিয়ার অপরাধ ঢাকতে প্রধান শিক্ষক, সাংবাদিক, এমনকি দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অকথ্য ভাষা সহ-হুমকি- ধামকি অব্যাহত রাখছে বলে জানা গেছে। 

আরো জানা গেছে, উক্ত গোলাম কিবরিয়া মোকামপুর বাজারে গ্রাম্য চিকিৎসক হিসেবে দোকানদারী করেন। আর সেখান থেকেই তার বিরুদ্ধে মেয়েলি কর্মকাণ্ড চর্চা বলে এলাকাইও অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে বাইরের কোনো ব্যবসা অথবা অন্য কোনো কাজ করতে পারবে কিনা তা তদন্ত করে দেখা দরকার। শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার বাইরে পার্শ্ব কর্মকান্ডে সময় দান বা জড়িত হতে পারবেন কিনা তাও তদন্ত করে দেখা সময়ের দাবী। পাশাপাশি গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগসহ পিছনের অভিযোগগুলোর ব্যাপারে সেই সময় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে কারো বা কোনো মহলের ত্রুটি আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা দরকার বলে অভিভাবকমহল মনে করেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে