ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মানুষের চাপ ছাড়াই পানি উঠছে দুটি টিউবওয়েলে সব সময়। দেখে মনে হচ্ছে ঝরণার পানি পড়ছে। প্রায় ৪ মাস এভাবেই অনবরত পানি উঠছে দুই টিউবওয়েল থেকে।কোন ভাবেই পানি উঠা বন্ধ হচ্ছে না। এমন ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার পারশ্রীরামপুর গ্রামে। পারশ্রীরামপুর গ্রামের পালপাড়ার রাস্তার পাশে বাড়িরে কাজের জন্য দুটি টিউবওয়েল স্থাপন করে স্থানীয় বাসিন্দা রনজিত কুমার ও অনিল কুমার।প্রায় চার মাস আগে থেকেই ওই টিউবওয়েল থেকে অনবরত পানি বের হচ্ছে। প্রথমে বিষয়টি অবাক লাগলে এখন অনেকের কাছে তা স্বাভাবিক।গ্রামের হরেন্দ্রনাথ বলেন, আমাদের গ্রামের দুটি টিউবওয়েলে অনবরত পানি উঠেই যাচ্ছে ২৪ ঘন্টা। তবে কোন প্রকার পানি তুলতে চাপ দেওয়া লাগে না। আমাদের খাবার পানি এখান থেকেই নেওয়া হয়।একই গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামে বেশ কিছু পাল পরিবার আছে। কুটি শিল্পের কাজের জন্য পাল এ পানি ব্যবহার করে। অটো পানি ওঠার কারণে তাদের কাজ অনেক সহজ হয়ে গেছে। টিউবওয়েলের মালিক রনজিত কুমার জানান, দীর্ঘ প্রায় ৪ মাস ধরে এভাবেই পানি উঠছে। এই পানি সকল কাজে ব্যবহার ও খাওয়ার উপযোগী মনে করি। এমনকি আমরা নিয়মিত এ পানি পানসহ সকল কাজ ব্যবহার করছি।অপর টিউবওয়েলের মালিক অনিল কুমার বলেন, হাতল চাপা লাগে না তাই আমাদের কুঠির শিল্পের কাজে বেশ উপকার আসছে। আমাদের কাজে পানির ব্যবহার বেশি থাকায় অনবরত পানি উঠার কারণে বেশ উপর্কত হচ্ছি। কোনো ধরনের বিদ্যুতের ব্যবহার ও চাপাচাপি বাদেই অনর্গল পানি উঠছে দুই টিউবওয়েল থেকে। তাও আবার এক-দুদিন ধরে না কমপক্ষে প্রায় ৪ মাস ধরে। কেউ বলছেন অলৌকিক ঘটনা কেউবা দাবি করছেন আশ্চর্যজনক বলে। এমনই বিরল ঘটনার দেখা মিলেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পারশ্রীরামপুর গ্রামের পালপাড়ায়।অসিত পাল জানান, সবই ভগবানের ইচ্ছে। আমরা সবাই এই পানি দিয়ে গোসল, খাওয়া, রান্না-বান্না করছি। গ্রামের মানুষ বলছে কোন পরিশ্রম ছাড়াই উঠছে পানি। আবার কোনো ব্যয়ও করতে হচ্ছে না। তাড়াহুড়োর সময় যে কেউ এই পানি ব্যবহার করতে পারছে নিজের ইচ্ছায়।টিউবওয়েলের মালিক অনিল পাল জানান,তাদের পালপাড়ায় বর্তমানে ২৫ টি পরিবার বসবাস করে। যাদের মূল পেশা কুমারের কাজ করা। কেউ কেউ কৃষি পেশার সাথেও যুক্ত আছেন। অতিরিক্ত পানি চলে যাচ্ছে চিত্রা নদীতে। যেখানে বহু স্থানে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার চললেও এই গ্রামের মানুষের পানি ব্যবহার করে দিন ভালই পার হয়ে যাচ্ছে। একটি কলের বয়স ১৫ বছর আর নতুন যেটি পোতা হয়েছে তার বয়স ৩ বছর। ১২০ ফুট করে পানির নিচে পাইপ বসানো হয়েছে। ঝিনাইদহ জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী আকমল হোসেন জানান, পানির লেয়ারের চাপের কারণে এ ঘটনা ঘটছে। যখন পানির চাপ নিচ থেকে কমে আসবে তখন পানি বের হওয়া আস্তে আস্তে কমে আসবে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্ঠী চন্দ্র রায় বলেন, গ্যাস জনিত বা পানির স্তরের ঊর্ধ্বমুখী চাপের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। তবে সরেজমিনে পরীক্ষা নিরীক্ষা করলে নলকূপে হাতলের চাপ ছাড়াই কেন পানি বের হচ্ছে তা জানা যেতো।