দেশের নিম্নআয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার এ বছর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ লাখ করেছে। এই কর্মসূচির অধীনে প্রতিটি পরিবার মাসে ৩০ কেজি চাল ১৫ টাকা কেজি দরে কিনতে পারবে। সোমবার (১১ আগস্ট ২০২৫) মানিকগঞ্জ জেলা সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, চলতি বছরের বোরো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শেষ হবে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট)। এরপর রবিবার (১৭ আগস্ট) থেকে শুরু হবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রথম ধাপ, যা চলবে নভেম্বর পর্যন্ত। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে কার্যক্রম স্থগিত থাকবে এবং দ্বিতীয় ধাপ চালু হবে ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত। পুরো সময়ে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এ বছর কর্মসূচির মেয়াদ পাঁচ মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করা হয়েছে। উপকারভোগীরা যাতে সঠিক সময়ে সঠিক দামে চাল পান, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও ওএমএস ডিলারদের সমন্বয়ে মনিটরিং জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি সতর্ক করেন।
বর্তমান খাদ্য মজুদ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে ২১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৩ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ আছে, যা নিরাপদ সীমার (সাড়ে ১৩ লাখ মেট্রিক টন) তুলনায় অনেক বেশি। বন্যা পরিস্থিতি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিবেচনায় সরকার আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি খাদ্য গুদামগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন।
সভায় জানানো হয়, মানিকগঞ্জ জেলার ২৫ শতাংশ এলাকা চরাঞ্চল এবং ৬৫ শতাংশ জমি নিচু হওয়ায় আগাম বন্যার ঝুঁকি থাকে। এ জেলায় সরু চালের পাশাপাশি বাদাম, গাজরসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদনও উল্লেখযোগ্য।
জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবির, আরসি ফুড ঢাকা, জেলার ডিসি ফুড, কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।