রাজধানীর গুলশান এলাকায় সাবেক একজন এমপির বাসায় চাঁদা আদায়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই ভিডিওটি জোরপূর্বক তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন অপুর স্ত্রী বৃষ্টি।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বৃষ্টি জানান, ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে ১ আগস্ট সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত অপু নিখোঁজ ছিলেন। এই সময় অজানা স্থানে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরবর্তীতে বুধবার (১৩ আগস্ট) ভাইরাল হওয়া ৩৫ মিনিটের ভিডিওটি জোর করে করানো হয়। বৃষ্টি বলেন, “অল্প অল্প করে শেখিয়ে অপুকে দিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোপীবাগের এক ব্যক্তির বাসার সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়, অথচ গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বেলা ১১টার পর। এই সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে অপুর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে চার দিনের রিমান্ডেও তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়।”
তিনি আরও জানান, অপু কোনোভাবেই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়, বরং কারো ফাঁদে পড়েছেন। “একটি চক্র নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অপুকে ব্যবহার করছে। গোপীবাগে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের বাসার সামনেই অপুকে আটক করা হয়েছে। যেসব ছবি ও ভিডিও ঘুরছে, সেগুলোও সেই বাসার,” বৃষ্টি সংবাদ সম্মেলনে বলেন।
বৃষ্টি অভিযোগ করেন, ভিডিও ধারনের সময় ইশরাক হোসেন ও তার লোকজন অপুকে প্রশ্ন করে স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে ভিডিওটি কাটছাট করে বিভিন্ন মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে, যার মাধ্যমে এনসিপি ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মনগড়া তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।
অপুর সঙ্গে ৮ আগস্ট কারাগারে সাক্ষাৎ করা প্রসঙ্গে বৃষ্টি বলেন, “অপু আমাকে জানিয়েছে যে তাকে জোরপূর্বক একটি বড়সড় ভিডিও বানানো হয়েছে। ভিডিওটি যে কোনো সময় প্রকাশ হতে পারে এবং আমি যেন তার হয়ে কিছু বলার চেষ্টা করি।” এছাড়া তিনি তার এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এই ঘটনায় আদালত বা পুলিশের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত যথাযথ চিকিৎসা বা নির্যাতন প্রতিকার পাওয়া সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই সংবাদ সম্মেলনের পর নতুন মামলা বা অতিরিক্ত বাধার মুখে পড়তে পারেন তারা।