জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার শুক্রবার বিকালে খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে পৃথক ভোটার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বললেন, “জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা স্পষ্ট করে ঐকমত্য কমিশনকে বলেছি, নির্বাচনের আগে অবশ্যই রাষ্ট কাঠামোর সংস্কার, হাজার হাজার ছাত্র-জনতার হত্যার বিচার ও আনুপাতিক হারে অর্থাৎ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা দিতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন হলে জনগণ সে নির্বাচন মেনে নেবে না।”
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা আখ্যায়িত করে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আবার কেউ কেউ এটাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতাও বলে। আমাদের প্রথম স্বাধীনতা এসেছিল ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। তারপরও এটাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা কেন বলা হয়। তার কারণ হলো বিগত সময়ে মানুষের কথা বলার সুযোগ ছিল না, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ভোটদানের অধিকার কোন কিছুই ছিল না।
‘জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষ তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। এজন্য এটাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা হচ্ছে। দুই হাজার ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ ও হাজার হাজার ছাত্র-জনতার পঙ্গুত্ববরণের মধ্য দিয়ে ফিরে পাওয়া স্বাধীনতাকে আমাদের সমুন্নত রাখতে হবে’-উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে ৬টায় সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার শলুয়া মদিনাতুল উলুম কওমি মাদরাসায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন। সকাল ৮টায় ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের হাইস্কুল সংলগ্ন কালভার্ট চত্বরে মতিলাল সরকারের সভাপতিত্বে এবং সকাল ১০টায় গজেন্দ্রপুর গ্রামের রূপরামপুর-গজেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে মো. বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে পৃথক দুটি হিন্দু সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।
এ সময় তিনি বলেন, সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু বলে এদেশে কোন শব্দ আর চলবে না। সবাই দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করবে। দেশের কোথাও কোনো হিন্দু নির্যাতিত হলে আমাদের দেশে এক শ্রেণীর লোক সেটাকে যাচাই-বাছাই না করে ট্যাগ দিয়ে বলে দেয় এটা জামায়াত-শিবির করেছে। আপনারাই বলেন, বিগত সময়ে কোনো জামায়াত বা শিবিরের লোক আপনাদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট বা মন্দিরে হামলা চালিয়েছে? আপনাদের জমি দখল করে নিয়েছে? আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি এটা জামায়াত-শিবির কখনো করেনি আর ভবিষ্যতেও করবে না।
‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে দেশে যখন কোনো সরকার ছিল না, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যখন ছিলো নিষ্ক্রিয় তখন এই জামায়াত-শিবিরের লোকজনই আপনাদের বাড়ি-ঘর, মন্দির পাহারা দিয়েছে, আপনাদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করেছে। সুতরাং আপনারা যদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেন তাহলে আপনারা আপনাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তার সঙ্গে নিশ্চিন্তে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন’-যোগ করেন তিনি।