মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের রাধানগর গ্রাম এখন রিসোর্ট পল্লী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এক দশক আগেও এই এলাকা ছিল নিস্তব্ধ ও সাদামাটা গ্রামীণ পরিবেশের গ্রাম। তবে পর্যটনের উত্থান আর ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে এখন গ্রামটি পরিণত হয়েছে দেশের অন্যতম রিসোর্টকেন্দ্রিক এলাকায়।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমদ জানান, রাধানগরে বর্তমানে প্রায় ১০০টি হোটেল, কটেজ, রিসোর্ট ও বাংলা রয়েছে। ফলে এই গ্রামকে এখন পর্যটকরা ডাকছেন ‘রিসোর্ট পল্লী’ নামে। চা বাগান, পাহাড়ি টিলা আর সবুজ অরণ্যের মাঝে সাজানো এসব রিসোর্টে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমাচ্ছেন সারা বছর।
রাধানগরের রিসোর্টগুলোর মধ্যে রয়েছে নানা বৈচিত্র্য। বালিশিরা রিসোর্ট, নভেম ইকো রিসোর্ট, প্যারাগন হোটেল এন্ড রিসোর্ট, হারমিটেজ গেস্ট হাউজ, নিসর্গ ইকো কটেজ, লিচুবাড়ি ইকো রিসোর্ট প্রভৃতি।
বিলাসবহুল, ইকো-থিম, ইনডোর পুল ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। প্রকৃতির কোলে আধুনিকতার ছোঁয়া, সুইমিং পুল, তিন তারকা মানের রিসোর্ট, আউটডোর পুল, ফিটনেস সেন্টার ও খাবারের সুবিধা রয়েছে এসব রিসোর্টে।
চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত ও হামহাম ঝরনা ভ্রমণে আসা পর্যটকদের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠছে রাধানগরের রিসোর্টগুলো। প্রাকৃতিক পরিবেশ, নিরাপত্তা, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এখানকার রিসোর্টগুলো দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, রিসোর্ট ব্যবসার কারণে রাধানগরে কর্মসংস্থান বেড়েছে কয়েকগুণ। হোটেল-রিসোর্টে শত শত স্থানীয় তরুণ কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। একই সঙ্গে বাড়ছে স্থানীয় কৃষিজ পণ্যের চাহিদা, পরিবহন ব্যবসা ও পর্যটননির্ভর অন্যান্য খাতের আয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাধানগরের রিসোর্ট ব্যবসা শুধু পর্যটন নয়, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে সরকারিভাবে পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়ন করা গেলে রাধানগর হতে পারে আন্তর্জাতিক মানের একটি পর্যটনকেন্দ্র।
শ্রীমঙ্গলের রাধানগর আজ শুধু একটি গ্রাম নয়-এটি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের এক আধুনিক রিসোর্ট পল্লী। বিলাসবহুল থেকে সাশ্রয়ী-সবার জন্য ভ্রমণ সুবিধা থাকায় পর্যটকদের কাছে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।