ধরাছোঁয়ার বাহিরে আ’লীগ সভাপতি

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) : | প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:৩৬ পিএম
ধরাছোঁয়ার বাহিরে আ’লীগ সভাপতি

জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর বরিশালে ও ঢাকায় নৃশংস হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলার আসামি জহিরুল হক তালুকদার এখনও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। ফলে মামলার বাদি ও তৎকালীন হামলায় আহত ছাত্র-জনতার মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কতিপয় বিএনপি নেতাকে ম্যানেজ করে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক তালুকদার। ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৭ জুলাই বিকেলে বরিশালের নথুল্লাবাদ জিয়া সড়ক ব্রিজের ঢালে হামলার নেতৃত্বে ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক তালুকদার। ওই হামলায় অসংখ্য ছাত্র-জনতা আহত হয়। এ ঘটনায় চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি জহিরুল হক তালুকদারসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় ভুক্তভোগী সুলতান খান একটি মামলা (যার নম্বর- ৬৬/২৮-০১-২০২৫) দায়ের করেন।

সূত্রে আরও জানা গেছে, বরিশালে হামলায় সফলতা দেখানোর পর জহিরুল হক তালুকদারকে তৎকালীন দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দরা ঢাকার মিরপুর এলাকায় পাঠান। সেখানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জহিরুল হকের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। ওই হামলায়ও একাধিক আন্দোলনকারীরা গুরুত্বর আহত হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় চলতি বছরের ১২ মে ঢাকার মিরপুর থানায় মো. নাজমুল সালাম নামের এক ভূক্তভোগী জহিরুল হক তালুকদারসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা (যাহার নাম্বার-২৯/১২-৫-২০২৫) দায়ের করেন। 

কবাই ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে জুলাই আন্দোলনের একাধিক ছাত্র প্রতিনিধিরা অভিযোগ করে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক তালুকদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকা সত্বেও অদ্যবর্ধি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেননি। বরং কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বীরদর্পে সে (জহিরুল) এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

উভয় মামলার বাদি অভিযোগ করে বলেন, অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় কতিপয় বিএনপি নেতা থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ম্যানেজ করায় এখনও জহিরুল হক তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এতে তারা (মামলার বাদি) চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনতিবিলম্বে একাধিক মামলার আসামি জহিরুল হক তালুকদারকে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন মামলার বাদিসহ এলাকাবাসী।

তবে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে কবাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক তালুকদার বলেন, স্থানীয় একটি মহল আমাকে দুইটি মামলায় আসামি বানিয়েছেন। আমি কোন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত ছিলাম না। যার সঠিক তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।

এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, কবাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক তালুকদারের বিরুদ্ধে যেসব থানায় মামলা রয়েছে, সেইসব থানা থেকে যদি আমাদের কাছে লিখিত পাঠায় তাহলে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করবো।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে