মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় পতাকা পোড়ানো নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার (২৫ আগস্ট) এক নির্বাহী আদেশে সই করে ঘোষণা দেন, এখন থেকে পতাকা পোড়ানোর শাস্তি হবে আগাম মুক্তি ছাড়াই এক বছরের কারাদণ্ড। শুধু তাই নয়, এ অপরাধে জড়িত বিদেশি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা হবে এবং তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
আদেশে বলা হয়, পতাকা পোড়ানো কেবল ‘উসকানি’ নয়, বরং এটি দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। সইয়ের পর ট্রাম্প বলেন, “যদি আপনি পতাকা পোড়ান, আপনাকে এক বছরের জন্য জেলে যেতে হবে। আগাম মুক্তি নেই, কোনো ছাড় নেই। সেটা রেকর্ডে থাকবে। আর তখনই পতাকা পোড়ানো বন্ধ হবে।”
তবে এই উদ্যোগ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী পতাকা পোড়ানোকে দীর্ঘদিন ধরেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অংশ হিসেবে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। ১৯৮৯ সালে সুপ্রিম কোর্টও এ বিষয়ে স্পষ্ট রায় দিয়েছিল।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো ট্রাম্পের আদেশকে সংবিধানবিরোধী বলছে। ‘ফায়ার’ নামের একটি সংগঠন বিবৃতিতে জানায়, “ট্রাম্প হয়তো মনে করছেন, কলমের এক খোঁচায় সংবিধান পাল্টে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে তার সে ক্ষমতা নেই। সরকার কখনোই সুরক্ষিত মতপ্রকাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না যদি তা কারও কাছে অপমানজনক বা উসকানিমূলক মনে হয়।”
আইন বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, ট্রাম্পের এ দাবি প্রমাণহীন এবং এটি মূলত এমন একটি জায়গায় ‘সমাধান খোঁজার চেষ্টা’, যেখানে প্রকৃতপক্ষে কোনো বড় সমস্যা নেই। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জি এস হ্যান্সের মতে, পতাকা পোড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাস্তব হুমকি নয়, বরং এটি একটি সংবিধান-সুরক্ষিত প্রতীকী প্রতিবাদ।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ আনা হয়েছে, বিদেশি নাগরিকরা পতাকা পোড়ানোর মাধ্যমে মার্কিনদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তবে এর স্বপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ হাজির করা হয়নি।