রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশের প্রস্তাবিত “নিরাপত্তা বাহিনী”মোতায়েনের উদ্যোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইউক্রেনে বিদেশি সেনা পাঠানো হলে তারা হবে “বৈধ লক্ষ্যবস্তু”।
বার্তা সংস্থা বিবিসি এক প্রতিবেদনে শুক্রবার এমন তথ্য জানিয়েছে।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ জানান, ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমি, সমুদ্র ও আকাশপথে ২৬ মিত্রদেশ সেনা পাঠাতে সম্মত হয়েছে। তবে কোন কোন দেশ এতে অংশ নেবে তা প্রকাশ করেননি।
পুতিন শুক্রবার বলেন, “বিদেশি বাহিনী ইউক্রেনে মোতায়েন হলে তা অযৌক্তিক হবে এবং তারা বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।” যদিও পশ্চিমা জোট জানিয়েছে, এ বাহিনী সামনের সারিতে যুদ্ধ নয়, বরং যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে হামলা ঠেকাতে কাজ করবে।
গত মাসে আলাস্কায় পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের পর স্বল্প সময়ের জন্য শান্তি আলোচনার আশা জেগেছিল। তবে শুক্রবার পুতিন আবারও বলেন, “ইউক্রেনের নেতৃত্বের সঙ্গে মূল ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব।”
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ট্রাম্পের “গঠনমূলক প্রচেষ্টার”প্রশংসা করলেও ইউরোপীয় দেশগুলোর “যুদ্ধ উসকে দেওয়ার প্রবণতা”র সমালোচনা করেছেন।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্যারিস বৈঠককে “প্রথম বাস্তব পদক্ষেপ”বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ভূমিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে ট্রাম্প সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাদের সহায়তা প্রধানত আকাশ প্রতিরক্ষায় সীমাবদ্ধ থাকতে পারে।
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে বৃহস্পতিবার বলেন, “ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়ে রাশিয়ার কোনো ভেটো নেই। ইউক্রেন একটি সার্বভৌম দেশ, সিদ্ধান্ত তাদের।”
তবে ইউরোপীয় কূটনীতিকরা সতর্ক করে বলেছেন, এখন সেনা মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে তা পুতিনের পশ্চিমবিরোধী বর্ণনাকে আরও জোরদার করবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর ইউক্রেনের প্রতি এখন “অটুট অঙ্গীকার”রয়েছে এবং রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দিতে হবে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসও বলেছেন, প্রথম কাজ হচ্ছে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা এবং পরে “দৃঢ় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা”দেওয়া।
রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের সাড়ে তিন বছর পর পুতিন যদিও দাবি করছেন, “টানেলের শেষে কিছুটা আলো দেখা যাচ্ছে”। তবে তিনি একই সঙ্গে ইউক্রেনের গণভোটের শর্ত ও সামরিক আইন জারির কারণে শান্তিচুক্তির সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।