বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে পরিবর্তন আসছে। কিছুদিন ধরে চলা আলোচনা ও শুনানির পর, সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ উদ্যোগটি মূলত দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্নীতিগ্রস্ত এসব ব্যাংকের পুনর্গঠন এবং গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ বোর্ড সভায় গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে, একীভূত হতে যাওয়া পাঁচটি ব্যাংকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই পাঁচটি ব্যাংক হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এবং এক্সিম ব্যাংক। প্রতিটি ব্যাংকে একটি প্রশাসক টিম থাকবে, যাতে আরও চারজন কর্মকর্তা সহায়তা করবেন।
বিশেষত, একীভূত হওয়ার পর ব্যাংকগুলোর সমস্ত সম্পদ ও দায়ভার স্থানান্তরিত হবে নতুন গঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ এর অধীনে। পরবর্তীতে এটি একটি বেসরকারি ব্যাংকে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে সরকার প্রথমে নিজের বিনিয়োগ ফেরত নেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, এই প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রায় ৪৮% থেকে ৯৮% ঋণ খেলাপি রয়েছে, যা ব্যাংকিং খাতে এক বড় ধরনের ঝুঁকি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এই অঙ্কের মধ্যে সরকার ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা সরবরাহ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় ইসলামী ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতি ও অনিয়মের অবসান ঘটানো সম্ভব হবে। পাশাপাশি, গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে ব্যাংক খাতে পুনর্গঠন সম্ভব হবে।