ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ

কাতারের ওপর হামলা হলে সামরিক প্রতিশোধ নেবে যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ১ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:০৭ পিএম | প্রকাশ: ১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম
কাতারের ওপর হামলা হলে সামরিক প্রতিশোধ নেবে যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার পর কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, কাতারের ওপর আবারও কোনো ধরনের আগ্রাসন হলে যুক্তরাষ্ট্র তার নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় প্রয়োজন হলে সামরিক পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। বিষয়টি মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরা জানিয়েছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় কয়েকজন ফিলিস্তিনি দলের সদস্য নিহত হন। তারা কাতারের উদ্যোগে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। তবে হামাসের শীর্ষ নেতারা প্রাণে বেঁচে যান। ওই ঘটনায় একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। ইসরায়েল পরে দাবি করে, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল হামাস নেতৃত্ব।

ঘটনার এক পর্যায়ে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কাতারের কাছে এ হত্যার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ ফোনালাপে এ ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রহণ করেন।

নতুন নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বলেন, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও যৌথ স্বার্থে আবদ্ধ। কাতার দীর্ঘদিন ধরে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করে আসছে। তিনি ঘোষণা দেন, কাতারের ওপর যে কোনো সশস্ত্র হামলাকে যুক্তরাষ্ট্র নিজের নিরাপত্তার ওপর হুমকি হিসেবে গণ্য করবে।

আল জাজিরা জানিয়েছে, এই অঙ্গীকার কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের আইনে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা চুক্তি কার্যকর করতে সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা কিছু ক্ষেত্রে অনুমোদন ছাড়াই আন্তর্জাতিক চুক্তি করেছেন। ফলে কাতার প্রসঙ্গে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্টের ওপরই নির্ভর করবে।

কাতার বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। দেশটিতে অবস্থিত আল উদেইদ এয়ারবেসে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের ফরওয়ার্ড অপারেশনাল ঘাঁটি রয়েছে। ২০২২ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কাতারকে প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।

আক্রমণের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ১৬ সেপ্টেম্বর দোহায় পৌঁছান এবং কাতারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যে নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব অটুট থাকবে এবং অঞ্চলকে স্থিতিশীল রাখতে দুই দেশ যৌথভাবে কাজ করবে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, দেশটি সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অটল এবং ভবিষ্যতে এমন হামলা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ ও উপসাগরীয় বিষয় বিশ্লেষক বাদের আল-সাইফ এ বিষয়ে মন্তব্য করে লিখেছেন, উপসাগরীয় অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্ব যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে শুধুমাত্র প্রেসিডেন্টের আশ্বাসের বাইরে কাতার আরও নির্দিষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দাবিদার