জুলাই জাতীয় সনদে সই করবে না ৪ দল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ০১:০২ এএম
জুলাই জাতীয় সনদে সই করবে না ৪ দল

জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বামপন্থী চারটি রাজনৈতিক দল। বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জরুরি বৈঠক শেষে দলগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংবিধানের চার মূলনীতি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সনদে প্রতিফলিত না হওয়ায় তারা এতে সই করবে না।

সিদ্ধান্তটি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাসদ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী)। এই চার দলের সঙ্গে গণফোরামও আপত্তি জানিয়েছে সনদের খসড়া বিষয়ে। তারা জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের স্বাধীনতার টেলিগ্রাম ও ১০ এপ্রিলের মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সনদে অন্তর্ভুক্ত না হলে তারাও স্বাক্ষর করবে না।

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, জুলাই সনদের পটভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি, তাই আমরা এতে সই করব না। তিনি আরও জানান, সনদের ৮৪ দফা সুপারিশের মধ্যে চারটি বাম দলের ভিন্নমত বা ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর ব্যাখ্যাগুলোও উপেক্ষা করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “আমরা কিছু অঙ্গীকারের বিরোধিতা করেছিলাম, যার একটি হলো—এই সনদ কোনো আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। এই কারণেও আমরা এতে স্বাক্ষর করব না।”

অন্যদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী)–এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম সনদটি এমনভাবে রচিত হবে, যাতে মতাদর্শগত ও ঐতিহাসিক বিভাজন এড়িয়ে ঐকমত্য গড়ে ওঠে। কিন্তু চূড়ান্ত খসড়ায় আমরা সেই প্রতিফলন দেখিনি।”

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, “আগামীকালের (আজকের) মধ্যে যদি আমাদের অবস্থান প্রতিফলিত করে সংশোধন আনা না হয়, তাহলে আমরা এতে স্বাক্ষর করব না।” তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার টেলিগ্রাম ও মুজিবনগর ঘোষণাপত্র জাতির মুক্তির ইতিহাসের ভিত্তি, তাই সেগুলোর অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য।

আগামীকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) নির্ধারিত ছিল জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। তবে চার বামদল ও গণফোরামের এই অবস্থান ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সনদ ঘিরে ঐকমত্য গঠনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা আপাতত জটিলতার মুখে পড়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে